লন্ডন, ১৩ ডিসেম্বর: ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় দিল ব্রিটেনের জনতা। বিপুল জনাদেশ নিয়ে ফের ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতে চলেছেন বরিস জনসন (Boris Johnson)। তুমুল জল্পনার অবসান ঘটিয়ে লেবার পার্টিকে ফের বিরোধী আসনের জন্য রেখা শাসকদলের ভূমিকায় কনজারভেটিভ পার্টি। ঐতিহাসিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে লেবার পার্টিকে পরাজিত করেছে তারা। হাউস অফ কমনসের ৬৫০ আসনের মধ্যে ৩২৬টিই জিতে নিয়েছে শাসক দল। এখনও এগিয়ে রয়েছে ৪৩ আসনে। ৪০টি আসন ঘোষণা হওয়ার আগেই ম্যাজিক ফিগার ৩২৬-এ পৌঁছে যায় কনজারভেটিভ পার্টি। পাঁচ বছরে তৃতীয়বার হওয়া নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর বরিস জনসন বলেছেন, 'ব্রেক্সিটকে ফলপ্রসূ করতে ও সামনের মাসে ব্রিটেনকে EU থেকে বের করে আনতেই শক্তিশালী নয়া জনাদেশ পেলাম।'
গত মে মাসে যখন বিপুল জনাদেস নিয়ে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল বিজেপি। তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে টুইট বার্তায় ফের ক্ষমতা দখলের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বরিস জনসন। আজ তেমনই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর আসন অক্ষুন্ন রাখায় বরিস জনসনকেও প্রতি শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি নরেন্দ্র মোদি। কনজারভেটিভ সমর্থকরা যখন জয়ের আনন্দে মশগুল তখন লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন এই ফলকে খুবই দুর্ভাগ্যজনক বলে ব্যাখ্যা করেছেন। পরাজয়ের দায় স্বীকার করে নিয়ে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে তিনি আর দলকে নেতৃত্ব দেবেন না। তবে পরবর্তী নেতা নির্বাচিত না-হওয়া পর্যন্ত তিনি ছায়া হিসেবে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। আরও পড়ুন-UK Election 2019: ব্রেক্সিটের গেরো, পরবর্তী নির্বাচনে লেবার পার্টির নেতা থাকছেন না জেরেমি করবিন
Many congratulations to PM @BorisJohnson for his return with a thumping majority. I wish him the best and look forward to working together for closer India-UK ties. pic.twitter.com/D95Z7XXRml
— Narendra Modi (@narendramodi) December 13, 2019
বলাবাহুল্য লেবার পার্টি ফের গণভোট করানোর কথা বলেছে। সে ক্ষেত্রে ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আর যাঁরা ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থেকে যাওয়ার পক্ষে, সেই অংশও মনে করছে, তাদের বিশ্বাস রক্ষা করা হয়নি। করবিন ইইউ-এ থেকে যাওয়ার মতো কোনও ভরসাও দেননি। এর পাশাপাশি ইহুদি-বিদ্বেষ তো লেবার পার্টির বড় সমস্যা। ব্রিটেনের প্রধান র্যাবাই জনতার উদ্দেশে লেবার পার্টিকে ভোট না দেওয়ার ডাক দিয়েছেন। ব্রিটেনে বসবাসকারী ভারতীয়রাও লেবার পার্টির উপরে এখন ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলছেন, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর থেকেই লেবার পার্টি ক্রমশ ভারত-বিরোধী, হিন্দু-বিরোধী হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে আজকের এই জয়ের ফলে ১৯৮০ সালে মার্গারেট থ্যাচারের পর ব্রিটেনের নির্বাচনে সর্বাধিক সফল কনজারভেটিভ নেতা হলেন বরিস জনসন। উল্টোদিকে শোচনীয় পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছে লেবার পার্টিকে। আনুমানিক ২০০ আসন তারা দখল করতে পেরেছে। কয়েক দশকে এটাই তাদের সবচেয়ে খারাপ ফলাফল।