টোকিও, ১৫ নভেম্বর: জাপানের (Japan) রাজ পরিবারের সবচেয়ে বেশী বয়েসের সদস্য মারা গেলেন। প্রিন্সেস য়ুরিকো (Princes Yuriko) ১০১ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন, বলে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। জাপানের অনেক উত্থান-পতনের সাক্ষী তিনি। পরমাণু বোমার আঘাত থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বুলেট ট্রেন থেকে অলিম্পিক আয়োজন, তথ্য প্রযুক্তিতে বিপ্লব আনা জাপানের উন্নতির নানা কথা-গল্প শোনা যেত রাজকুমারী য়ুরিকোর মুখে। টোকিও-র এক হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন রাজকুমারী য়ুরিকো।
১৯২৩ সালে তাঁর জন্ম হয়েছিল। মহাধুমধাম করে ১৮ বছর বয়েসে তাঁর বিয়ে হয় জাপানের রাজকুমার মিকিসার সঙ্গে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক এক মাস আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। বর্তমানে জাপানের সম্রাট নারুহিতোর কাকা হলেন রাজকুমার মিকিসা। মিকিসা ও য়ুরিকো রাজপরিবারের সদস্য হলেও, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলায় তাদের হানিমুনটা বাঙ্কারের সরু ঘরেই সারতে হয়েছিল। তাঁদের সন্তানের জন্মও হয় বাঙ্কারেই। কন্যা সন্তানের জন্মের আগে মার্কিন বোমারু বিমানের হামলায় জাপানের রাজপ্রাসাদ ধ্বংস হয়েছিল, তাই শিশু কন্যাকে খোলা আকাশের নিচেই জন্মাতে হয়েছিল। তবে তার জন্মের এক মাস পর ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ হয়। য়ুরিকোর পাঁচ সন্তানের মা হওয়ার পাশাপাশি ইতিহাসের গবেষণা করতেন। সামাজিক কাজকর্মের তাঁর সক্রিয় ভূমিকা জাপানের রাজপরিবাবের যে কোনও সদস্যের চেয়ে বেশীই ছিল।
যুরিকোর মৃত্যুর পর জাপানের রাজ পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১৬-তে নেমে গেলে। তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্য়া ৪। জাপানের রাজ পরিবারের মর্যাদা বা সম্মানরক্ষা নিয়ে দেশজুড়ে দু রকমের মত রয়েছে। একদল বলেন, গোটা বিশ্ব যখন গণন্ত্রের পক্ষে ঝুঁকে, জাপানের মানুষও তেমনটা চায়, তখন রাজ পরিবারকে আলাদা করে সরকারের বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। অনেকে আবার ইংল্যান্ডের রাজ পরিবারের উদাহরণ টেনে জাপানের রাজ পরিবারের পক্ষে কথা বলছেন।