কলকাতা, ২১ জুলাই: ২০২০-র একুশে জুলাই থেকে ২০২১-র একুশে জুলাই। তৃণমূলের শহিদ দিবসের মাঝের একটা বছরে দলের মধ্যে অনেক ঝড় বয়ে গিয়েছে। আবার ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে স্মরণীয় জয়ের পর ঝড় থেমে, দলে ফিরে আসার স্রোত শুরু হয়েছে। গত বছরও তৃণমূলের ভার্চুয়াল শহিদ দিবসে মনে চাপা ক্ষোভে পুষে হলেও ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব ব্যানার্জি-রা। ভোটের আগে তৃণমূলের দুই মন্ত্রী-শুভেন্দু অধিকারী ও রাজীব ব্যানার্জি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর বৈশালী ডালমিয়া থেকে সোনালি গুহ-একে একে তারকা বিধায়করা দল ছাড়তে শুরু করেন। টলিউডে তৃণমূলের যে একচেটিয়া রাজ ছিল, তাতেও থাবা বসায় বিজেপি। পাপিয়া অধিকারী থেকে শ্রাবন্তী-তনুশ্রী-পার্নো, যশ-হিরণ সহ টলিউড তারকারা বিজেপিতে যোগ দিয়ে ভোটে লড়েন। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ-রা বারবার বাংলায় ছুটে এসে দিদিকে চাপে ফেলেন। আরও পড়ুন: তৃণমূলের শহিদ দিবসের পালটা বিজেপির 'গণতন্ত্র বাঁচাও, বাংলা বাঁচাও', ধর্নায় দিলীপ ঘোষ
কিন্তু এতসবের পরেও কোনও লাভ হয়নি। ২১৩টি আসনে জিতে ক্ষমতায় ফেরেন মমতা ব্যানার্জি। ভোটের পরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন দিদির এক সময়ের সৈনিক মুকুল রায়। সোনালি গুহ থেকে দীপেন্দু বিশ্বাসের মত 'দলবদুল'রা ক্ষমা চেয়ে তৃণমূলে ফিরতে চান। জেলায় জেলায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরার ঢল পড়ে যায়। এক বছরের মধ্যে সত্যি পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে অনেকটা। আর বাংলার সিংহাসন বাঁচানোর চাপ নেই, এবার তৃণমূলের লক্ষ্য দিল্লি দখল। ২০২০-এর শহিদ দিবনস থেকে ২০২১-র শহিদ দিবসের মাঝে তৃণমূলের সবচেয়ে বড় বদল হল দলের লক্ষ্যে। কুড়ির একুশে ছিল রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখা, আর একুশের একুশে লক্ষ্য হল ২০২৪ নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীকে দেশের সিংহাসন থেকে সরানো।
My heartfelt tribute to the 13 innocent lives that were lost on this day in 1993. I urge all my brothers & sisters to join me today at 2PM in a virtual meet to honor the brave souls.
Our voices against those committing inhumane atrocities shall keep growing louder.#ShahidDibas
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 21, 2021
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত এক বছরে তৃণমূলে যেটা সবচেয়ে বড় বদলেছে তা হল দলীয় অনুশাসন। দলের চেয়ে কেউই বড় নয় তা ভোটেই প্রমাণ হয়েছে। ডোমজুড়ে 'দলবদলু' রাজীব ব্যানার্জি ৪০ হাজারেরও বেশি হারের যে শিক্ষাটা পেয়েছেন তা সবার কাছে পৌঁছে গিয়েছে। বালিতে হেরে বৈশালি ডালমিয়া থেকে উত্তরপাড়ায় হারা প্রবীর ঘোষাল-রাও বুঝেছেন সে কথা। তবে এবার দলের নেতা-কর্মীদের দায়িত্ব আরও বাড়ছে। তৃণমূলের দিকে তাকিয়ে এখন গোটা দেশের মোদী বিরোধীরা। তৃণমূল নেতাদের একটা ভুলে লাভ হবে মোদী-শাহ শিবিরের। বাংলাকে উদাহরণ হতে হবে দেশের কাছে। উদাহরণটা দলীয় নেতা-কর্মীদেরও তুলে ধরতে হবে।