মারুফা মেমোরিয়াল হসপিটাল

বারুইপুর, ১০ এপ্রিল: ট্য়াক্সি চালিয়ে টাকা জমিয়ে বোনের স্মৃতিতে হাসপাতাল (Hospital) গড়েছিলেন। এই দুঃসময়ে ফের নিজের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন ট্য়াক্সি চালক মহম্মদ সইদুল লস্কর (Md Saidul Laskar)। এবার নিজের কষ্টে গড়া সেই হাসপাতালকে কোয়ারান্টিন সেন্টার (quarantine centre) তৈরি করতে সরকারকে দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন তিনি। হাসপাতালের পরিকাঠামো দেখে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। প্রয়োজন পড়লে ৫০ বেডের কোয়ারান্টিন সেন্টার হিসেবে সইদুলের হাসপাতালকে ব্যবহার করতে পারে রাজ্য।

অত্যন্ত কষ্ট করে বারুইপুরে পূর্ণি গ্রামে (Punri village) ৫৫ বেডের একটি হাসপাতাল তৈরি করেছেন সইদুল। দোতলা সেই হাসপাতালটি কোয়ারানটিন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করতে রাজ্য সরকারকে প্রস্তাব দিলেন তিনি। নিজের বোন মারুফা খাতুনের স্মৃতিতে এই হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন তিনি। নাম দিয়েছিলেন মারুফা মেমোরিয়াল হসপিটাল (Marufa Memorial Hospital)। সইদুল বলেন, "আমি বহু বছর আগে কেনা জমির একটি প্লটে হাসপাতালটি তৈরি করেছিলাম এবং এটি আমার বোন মারুফার নামে রেখেছিলাম। এমন কিছু দিন ছিল যখন আমি এবং আমার স্ত্রী হাসপাতালের জন্য তহবিলের জন্য মুড়ি খেয়েছিলাম। আমার চারটি হলুদ ট্যাক্সি বিক্রি করতে হয়েছিল। আমার স্ত্রী শামীমার গয়নাও বিক্রি করতে হয়েছিল।" আরও পড়ুন: Coronavirus Outbreak In India: ভারতে করোনা গোষ্ঠী সংক্রমণ ধরা পড়েনি, জানিয়ে দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক

সইদুলের তৈরি হাসপাতালে প্রতিদিন আউটডোর এবং জরুরি ওয়ার্ড মিলিয়ে ৩০০ জন রোগীর চিকিৎসা হয়। পরিকাঠামো আরও উন্নতি করতে সইদুল আরও তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। যদিও করোনভাইরাসের কারণে সেই পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছেন তিনি। বদলে সরকারকে কোয়ারান্টিন সেন্টার গড়ার জন্য হাসপাতাল দেওয়ার প্রস্তাব দেন। সইদুল বলেন, "আমার স্ত্রী এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে গেছিলাম। তাঁরা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে প্রস্তাবটি স্বাস্থ্য বিভাগ ও মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"

হাসপাতালটি কোয়ারানটিন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখে এসেছেন বিডিও ও আরও পাঁচ প্রশাসনিক আধিকারিক। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে এই বিষয়ে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। নিজের হাসপাতাল দান করা ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৫০০০ টাকা দান করেছেন সইদুল। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার এক আধিকারিক বলেন, "যেখানে হাসপাতালটি অবস্থিত তাতে এটি কোয়ারান্টিন সেন্টার তৈরি করা যায়। চূড়ান্ত অনুমোদনের বিষয়টি অবশ্য উপর মহল থেকে আসতে হবে। সঙ্কটের এই সময়ে লস্কর তাঁর হাসপাতালের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে আমরা কৃতজ্ঞ।"