ছুটিতে ছোটাছুটি করবেন না তো কবে করবেন, তবে সেই ছোটাছুটি যদি হয় বেড়াতে যাওয়ার তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সপ্তাহান্তে ছুটি মিলতেই ঝোলা কাঁধে বেরিয়ে পড়ুন দেখি মন এমনিই ভাল হয়ে যাবে। আমাদের বাংলায় দর্শনীয় স্থানের শেষ নেই শুধু খুঁজেপেতে যাওয়ার উদ্যোগ করতে হবে এই যা। করে ফেললেই হল, তারপর শুধু হারিয়ে যাওয়ার পালা। আজ রইল টইটইয়ের পর্ব ২০।
মংপু(Mongpoo)
কবিগুরুর(Rabindra nath Tagore) স্মৃতি বিজড়িত মংপু বাঙালির অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হবে এ আর নতুন কি। শিলিগুড়ি(Siliguri) থেকে রাম্বি যাওয়ার পথে ডান হাতে ৯ কিলোমিটার গিয়ে পাহাড়ের উপত্যকার খাঁজে এক রমণীয় পাহাড়ি শহর হল এই মংপু। সিঙ্কোনা চাষের জন্য এই মংপু ভূগোল বইতেও ঠাঁই করে নিয়েছে। কালিম্পং থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে ৩৭৫৯ ফুট উচ্চতায় রয়েছে এই পাহাড়ি শহর।দার্জিলিং থেকে ৫৭ ও শিলিগুড়ি থেকে ৪৯ কিমি। গ্যাংটক থেকেও বাস যাচ্ছে মংপুতে। এইখানেই মৈত্রেয়ী দেবীর(Maitreyi Devi) বাড়িতে বসে রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিখ্যাত ‘জন্মদিন’ কবিতাটি লেখেন। আজ সেখানে রবীন্দ্র স্মারক ভবন’ হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের মংপুতে কাটানোর দিনগুলি নিয়ে মৈত্রেয়ী দেবী রচনা করেন ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’।
মংপু থেকে ১৩ কিমি নিচুতে শাল, সেগুন, অর্জুনে ছাওয়া পাহাড় থেকে নেমেছে কালিঝোরা। ধ্যানমগ্ন পাহাড় আর অরণ্য, ধারা নামছে ৫৫০ ফুট উঁচু থেকে। সেই ঝোরার নামেই জায়গার নাম। বয়ে চলেছে তিস্তা। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক শোভার জন্যই কালিঝোরার খ্যাতি রয়েছে। কালিঝোরা বাজার থেকে খাড়াই পথ গিয়েছে ১৬ কিমি দূরে ৪০০০ ফুট উঁচু লাটপাঞ্চারে। লেপচা ভাষায় লাট মানে বেত, আর পাঞ্চার হচ্ছে জঙ্গল। অর্থাৎ বেতের জঙ্গল লাটপাঞ্চার। সূর্যালোকে ক্ষণে ক্ষণে নাকি সাজবদল হয় লাটপাঞ্চারের। আরও এগিয়ে মহানন্দা অভয়ারণ্য(Mahananda Wildlife sanctuary)। লাটপাঞ্চারের ২ কিমি দূরে সনসেরিদাঁড়া ভিউপয়েন্ট থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ও অন্যান্য তুষারশৃঙ্গ নয়নাভিরাম। মংপু থেকে যেতে পারেন পেশক, সেখান থেকে তাগদা হয়ে ঘুম। এই ঘুমের পথে যেতে ৩ কিমি দূরে পাহাড়ে ঘেরা সবুজ ইকো ভিলেজ তিনচুলে। এখানেও এখন পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। এখান থেকে হিমালয়কে যেন হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায়। মংপুতে থাকার জন্য রয়েছে পূর্ত দপ্তর ও সিঙ্কোনা প্ল্যানটেশনের বাংলো। কালিঝোরাতেও পূর্ত দপ্তরের একটি বাংলো আছে। লাটপাঞ্চারে আছে লাটকুঠি বনবাংলো। তিনচুলেতে বেসরকারি ট্যুরিস্ট লজ।