Credits: Archived, edited, symbolic images

শুষ্ক, প্রাণহীন এবং দুর্বল চুল একটি গুরুতর সমস্যা। এই সমস্যা সৌন্দর্যকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসকেও দুর্বল করে দেয়। বাজারে অনেক রাসায়নিক ভিত্তিক চুলের পণ্য পাওয়া যায়, তবে এগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে, আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা তেল চুলের জন্য নিরাপদ এবং কার্যকর বিকল্প হতে পারে। এটি চুলকে মজবুত করার পাশাপাশি ঘন, উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যকরও রাখে। প্রাকৃতিক ভেষজ এবং তেল দিয়ে তৈরি হয় এই আয়ুর্বেদিক চুলের তেল, যা চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায় এবং তাদের শক্তিশালী করে। এই তেল মাথার ত্বক সুস্থ রাখে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং চুল পড়া রোধ করে। এছাড়াও, এটি প্রাকৃতিকভাবে চুল কালো, ঘন এবং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।

 

নিয়মিত আয়ুর্বেদিক তেল চুলে ব্যবহার করলে খুশকি, মাথার ত্বকের সংক্রমণ এবং চুল পাকার মতো সমস্যাও কমে যায়। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ঘরে বসে কীভাবে তৈরি করতে হবে এই আয়ুর্বেদিক চুলের তেল। ঘরে আয়ুর্বেদিক চুলের তেল তৈরি করার জন্য প্রয়োজন কিছু সহজ উপাদান এবং কিছু সময়। এই তেল তৈরির পদ্ধতি খুবই সহজ এবং এতে ব্যবহৃত উপাদানগুলি সহজেই পাওয়া যায়। এই তেলটি তৈরি করার জন্য প্রয়োজন ১০০ মিলি নারকেল তেল, ৫০ মিলি তিলের তেল, ২ চা চামচ আমলকির শুকনো গুঁড়ো, ২ চা চামচ ব্রাহ্মী গুঁড়ো, ২ চা চামচ ভ্রিংরাজ পাউডার, ১ চা চামচ মেথি বীজ, ১০-১২ টা নিম পাতা, ১ চা চামচ রিঠা পাউডার, ৪-৫টা লবঙ্গ এবং ১টি ছোট টুকরো দারুচিনি।

এই আয়ুর্বেদিক চুলের তেল তৈরি করার জন্য প্রথমে একটি প্যানে নারকেল তেল এবং তিলের তেল গরম করে নিতে হবে। তেল গরম হওয়ার পর তাতে মেথি বীজ, নিম পাতা, লবঙ্গ এবং দারুচিনি মিশিয়ে নিতে হবে। এই উপকরণগুলো তেলে ভাজতে হবে যতক্ষণ না নিম পাতা হালকা বাদামী হয়ে যায়। এরপর তাতে আমলা গুঁড়ো, ব্রাহ্মী গুঁড়ো, ভ্রিংরাজ গুঁড়ো এবং রিঠা গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে হবে। সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে কম আঁচে প্রায় ৫-৭ মিনিট রান্না করতে হবে। মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি পরিষ্কার কাপড়ে ছেঁকে নিতে হবে। ফিল্টার করা তেল একটি বায়ুরোধী বোতলে সংরক্ষণ করতে হবে। এই আয়ুর্বেদিক চুলের তেল সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে হবে।

এই আয়ুর্বেদিক তেলটি ব্যবহার করার আগে সামান্য গরম করে তারপর মাথার ত্বক এবং চুলের গোড়ায় ভালো করে ম্যাসাজ করতে হবে। এরপর ১-২ ঘন্টা রেখে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই তেলটি নিয়মিত ব্যবহার করলে, ৩০ দিনের মধ্যে চুলের উন্নতি দেখতে পাওয়া যাবে। এই তেলে উপস্থিত ভেষজ চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল পড়া রোধ করে। আমলা এবং ভ্রিংরাজের মতো ভেষজ চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং ঘন করে। নারকেল তেল এবং তিলের তেল প্রাকৃতিকভাবে চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং শুষ্কতা দূর করে। নিম এবং রিঠার ছত্রাক-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা খুশকি দূর করে এবং মাথার ত্বককে সুস্থ রাখে। এই তেল চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা প্রদান করে এবং চুলকে নরম করে তোলে।