![](https://bnst1.latestly.com/wp-content/uploads/2024/02/1-22-2-380x214.jpg)
বীর দামোদর সাভারকর ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাস। একজন পরিশ্রমী কর্মী এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে সাভারকর ভারতে নিজের এমন একটি জায়গা তৈরি করেছিলেন যার কোনও বিকল্প হয় না। তিনি এমন একজন কর্মী ছিলেন যিনি মুক্ত মনের সঙ্গে 'হিন্দুত্ব' চিন্তা নিয়ে এসেছিলেন, যাকে বর্তমানে জাতীয়তাবাদের নাম দেওয়া হয়। এমনকি তাঁর ‘হিন্দুত্ব’ চিন্তায় আতঙ্কিত হয়েছিল ব্রিটিশরাও। তিনিই দেশের প্রথম ব্যক্তি যিনি অবসান ঘটান রত্নাগিরিতে অস্পৃশ্যতা প্রথার। এছাড়াও নিম্নবর্ণের শিশুদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করতে চকলেট এবং স্লেট বিতরণ করতেন। সকলেই সাভারকরের ক্ষমতা, ধৈর্য, সাহস ও দূরদর্শিতার ভক্ত। ১৯৬৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় বীর দামোদর সাভারকরের। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেনে নেওয়া যাক তাঁর নেতৃত্বের মূল নীতিগুলি।
একজন নেতার সবচেয়ে বড় গুণ হল তাঁর দূরদর্শিতা। বীর সাভারকরের দূরদর্শিতার কারণে তাঁকে হিন্দু মহাসভার সদস্য করা হয়। সাভারকর এমন এক সময়ে হিন্দুত্ব প্রচার করেন যে সময়ে ভারতের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি তার তীব্র বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু সাভারকারের 'হিন্দুত্ব' ছিল বর্ণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং বীর সাভারকর ঘরে ঘরে গিয়ে বিভিন্ন বর্ণের মানুষকে মিষ্টি বিতরণ করতেন। হিন্দুত্বের প্রতি সাভারকারের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ভিন্ন এবং অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
জ্ঞানী এবং দক্ষ নেতৃত্বের জন্য পরিচিত ছিলেন সাভারকর। ফার্গুসন কলেজ এবং যুক্তরাজ্য থেকে ডিগ্রী অর্জনের সময় অন্যান্য পড়ুয়াদের ব্রিটিশ দখলের অধীনে ভারতের সংগ্রাম সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। ১৯০৭ সালের মে মাসের প্রথম দিকে লন্ডনে থাকাকালীন ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপনের আয়োজন করেছিলেন তিনি। ১৮৫৭ সালের শহীদদের সম্মান করার কিংবদন্তি ব্যাজ পরিয়েছিল পড়ুয়াদের।
বীর সাভারকর স্বাধীনতার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করার পাশাপাশি বিভিন্ন অসুবিধার মুখোমুখি হয়েছিলেন। ১৯০৪ সালে, পুনেতে তার ছাত্রজীবন কাটানোর সময়, তিনি তাঁর ভাই গণেশ দামোদর সাভারকরের সঙ্গে ভারত সোসাইটি নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও তিনি স্বাধীন ভারত সোসাইটি এবং ইন্ডিয়া হাউসেও কাজ করেন। ব্রিটেনে থাকার সময় ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার উপর তিনি বেশ কিছু বই লিখেছেন। আন্দামানে ১৫ বছরের সশ্রম কারাবাসের পর সামাজিক সংস্কারের দিকে মনোনিবেশ করেন তিনি।
বিশ্বের বৃহত্তম শক্তি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে দখল করেছিলেন বীর সাভারকর। তিনি সাহস ও বীরত্বের সঙ্গে ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার আহ্বান জানিয়ে ছিলেন। তিনি গান্ধী ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস বিভক্তির তীব্র বিরোধিতা করেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের কাজে নামার পর, বীর সাভারকারকে অক্লান্ত কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে তার কারাবাস থেকে শুরু করে যুক্তরাজ্য থেকে তার প্রত্যর্পণ পর্যন্ত, অনেক সমস্যার সন্মুখীন হতে হয় তাঁকে। তা সত্ত্বেও সমস্ত কাজ দৃঢ়তা না হারিয়ে করে গিয়েছিলেন তিনি।