প্রতি বছর ২৩ সেপ্টেম্বর পালন করা হয় আন্তর্জাতিক সাংকেতিক দিবস। বধির এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাষা এবং সাংকেতিক ভাষা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পালন করা হয় এই দিনটি। সাংকেতিক ভাষা হল একটি ভিজ্যুয়াল ভাষা, যা বধির এবং শ্রবণশক্তিহীন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথোপকথনের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি একটি প্রাকৃতিক ভাষা, যার নিজস্ব ব্যাকরণ, বাক্যের গঠন এবং শব্দভান্ডার রয়েছে। প্রধানত হাত এবং মুখের অভিব্যক্তির মাধ্যমে ব্যবহার করা হয় সাংকেতিক ভাষা। সাংকেতিক ভাষা শেখা যতটা কঠিন মনে হয় ততটা কঠিন নয়। এটি একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের ভাষা, যা চাক্ষুষ সংকেত এবং শরীরের নড়াচড়ার মাধ্যমে চিন্তা ও অনুভূতি প্রকাশ করার হয়।

সাংকেতিক ভাষা মানুষের ইতিহাসের মতোই প্রাচীন। এই ভাষাগুলি বধির সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের প্রাথমিক মাধ্যম। এগুলি বধির সম্প্রদায়ের মানুষদের একে অপরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং ধারণা বিনিময় করার জন্য একটি অনন্য উপায়। সাংকেতিক ভাষাগুলিকে প্রায়শই একটি বিকৃতি বা দুর্বলতা হিসেবে বিবেচনা করা হত। তবে সময়ের সঙ্গে সাংকেতিক ভাষা একটি সম্পূর্ণ বিকশিত ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং বধির সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই তীব্র হয়। সাধারণ মানুষের মধ্যে সাংকেতিক ভাষা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই আন্তর্জাতিক সাংকেতিক ভাষা দিবসের মূল উদ্দেশ্য।

আন্তর্জাতিক সাংকেতিক ভাষা দিবস মানুষদের বুঝতে সাহায্য করে যে সাংকেতিক ভাষা একটি ভাষা, যোগাযোগের একটি মাধ্যম এবং এটি বধির সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটি সাংকেতিক ভাষায় কথা বলা মানুষদের প্রতি বৈষম্য দূর করতেও কাজ করে। এটি মানুষদের বুঝতে সাহায্য করে যে সাংকেতিক ভাষা একটি বিকৃতি নয়, একটি প্রাকৃতিক এবং সুন্দর ভাষা। সাংকেতিক ভাষা সারা বিশ্বে নিজস্ব সংস্কৃতি অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। প্রতিটি দেশ বা অঞ্চলের নিজস্ব স্বতন্ত্র সাংকেতিক ভাষা রয়েছে। বধিররা যাতে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য পরিষেবাগুলিতে সমান সুযোগ ও অধিকার পায় তা নিশ্চিত করার জন্য প্রচেষ্টা করা হয় আন্তর্জাতিক সাংকেতিক ভাষা দিবসে।