প্রজাতন্ত্র দিবসে (Republic Day) এবার কলকাতার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিশেষ নজর দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। গোটা শহরকেই মুড়ে ফেলা হচ্ছে নিরাপত্তার চাদরে। অন্যান্যবারের তুলনায় আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। পাশাপাশি শহর ও শহরতলিতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে হাওড়া ও বিধাননগর পুলিশও এই মহাযজ্ঞে সামিল। ভারতে সাধারণতন্ত্র দিবস (Sadharan Tantra Divas) বা প্রজাতন্ত্র দিবস (Republic Day) পালিত হয় ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি। এই দিন ভারত সরকার ভারতীয় সংবিধান (Indian Constitution) কার্যকরী হওয়ার ঘটনাকে স্মরণ করে। এটি ভারতের একটি জাতীয় দিবসও (National Holi Day)। এই দিনটিতে ভারতীয় গণপরিষদ সংবিধান কার্যকরী হলে ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান থেকে কুচকাওয়াজের মাধ্যমে সামরিক শক্তির পাশাপাশি সংস্কৃতি ও উন্নয়নের ছবি প্রদর্শন। কলকাতা থেকে নয়াদিল্লি, প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রসঙ্গ উঠলেও প্রথমেই এমন ছবিই। এ বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের দুদিন আগে আরও একবার জেনে নেওয়া যাক সেই ইতিহাস। মহাত্মা গান্ধি (Mahatma Gandhi) এই দিনটির নাম দিয়েছিলেন স্বতন্ত্রতা সংকল্প দিবস। দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর (Jawaharlal Nehru) নেতৃত্বে ১৯২৯ সালের বর্ষশেষে 'পূর্ণ স্বরাজ' (Purna Swaraj) আনার শপথ ঘোষণার পর ১৯৩০ সাল থেকে ২৬ জানুয়ারিকেই স্বাধীনতা দিবস (Independence Day) ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে ঔপনিবেশিক শাসনের শিকল ভেঙে ভারত যেদিন বাস্তবেই স্বাধীনতার মুখ দেখল- সেইদিন ঘটনাচক্রে ছিল ১৫ অগস্ট। যার ফলে পালটে গেল ২৬ জানুয়ারির গুরুত্বও। তবে ১৯৫০ সালে দেশের সংবিধান প্রস্তুত হওয়ার পর, তা কার্যকর করতে প্রয়োজন হল একটি দিনের। তখনই ঐতিহাসিক মাহাত্ম্যের বিচারে বেছে নেওয়া হয় ২৬ জানুয়ারিকেই। এই কারণেই ২৬ জানুয়ারি পরিচিত হল ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে। প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি রাজধানীর রাজপথে আড়ম্বরের সঙ্গে পালিত হয় প্রজাতন্ত্র দিবস। পাশাপাশি প্রজাতন্ত্র দিবসের অতিথি হিসেবে প্রতি বছরই আমন্ত্রিত থাকেন কোনও এক রাষ্ট্রপ্রধান। এই বছর অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট (President Of Brazil) জেয়ার বলসোনারো। আরও পড়ুন: Swami Vivekananda Jayanti 2020 Quotes: আজ স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য আপনার বন্ধু-পরিজনদের মধ্যে শেয়ার করুন এই বাংলা Wishes, Facebook Greetings, WhatsApp Status, এবং SMS গুলি
স্বাধীনতা লাভের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হয় যুক্তরাজ্যের সংসদে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাশ হওয়ার মাধ্যমে। এর ফলে ব্রিটিশ ভারত ভেঙে গিয়ে কমনওয়েলথ অফ নেশনস-এর অন্তর্গত অধিরাজ্য হিসেবে দু'টি স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত (India) ও পাকিস্তানের (Pakistan) জন্ম হয়। ১৫ই অগস্ট ১৯৪৭ এ ভারত স্বাধীন হলেও দেশের প্রধান হিসেবে তখনও বহাল ছিলেন ষষ্ঠ জর্জ এবং লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন ছিলেন এর গভর্ণর জেনারেল। তখনও দেশে কোনো স্থায়ী সংবিধান ছিল না। ঔপনিবেশিক ভারত শাসন আইনে কিছু রদবদল ঘটিয়েই দেশ শাসনের কাজ চলছিল। ১৯৪৭ সালের ২৮ অগস্ট একটি স্থায়ী সংবিধান রচনার জন্য ড্রাফটিং কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ভীমরাও রামজি আম্বেডকর (V R Ambedkar)। ৪ নভেম্বর ১৯৪৭ তারিখে কমিটি একটি খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করে গণপরিষদে জমা দেয়। চূড়ান্তভাবে সংবিধান গৃহীত হওয়ার আগে ২ বছর, ১১ মাস, ১৮ দিন ব্যাপী সময়ে গণপরিষদ এই খসড়া সংবিধান আলোচনার জন্য ১৬৬ বার অধিবেশন ডাকে। এই সমস্ত অধিবেশনে জনসাধারণের প্রবেশের অধিকার ছিল। বহু বিতর্ক ও কিছু সংশোধনের পর ২৪ জানুয়ারি ১৯৫০ এ গণপরিষদের ৩০৮ জন সদস্য চূড়ান্ত সংবিধানের হাতেলেখা দু'টি নথিতে (একটি ইংরেজি ও অপরটি হিন্দি) স্বাক্ষর করেন। এর দু'দিন পর সারা দেশব্যাপী এই সংবিধান কার্যকর হয়।