
উত্তরপ্রদেশের মহাকুম্ভ মেলা থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজ্য সরকার চলতি মাসে পূর্ব মেদিনীপুরের দীঘায় প্রস্তাবিত জগন্নাথ মন্দির (Digha Jagannath Temple) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের সুরক্ষায় সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (CM Mamata Bandopadhyay) গত ১৬ এপ্রিল নবান্নে মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের আধিকারিক ও জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাফিক ব্যবস্থা সহ সমুদ্রে নজরদারি সংক্রান্ত বিষয়ে সব দপ্তরের মধ্যে মসৃণ সমন্বয়ের উপরে জোর দিয়েছেন। হাওড়া ও কোলাঘাট থেকে দীঘা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি লাগানো ছাড়াও ওয়াচ টাওয়ার তৈরির কথা বলেন তিনি।
রেল স্টেশনে যেন কোন পদপৃষ্ঠের ঘটনা না ঘটে তার জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান তিনি। অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছতে দীঘায় বয়স্ক মানুষদের জন্য পরিবেশবান্ধব গ্রীন কার রাখা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। অনেকে এই অনুষ্ঠানটা শান্তিপূর্ণভাবে করতে দেবে না বলেও মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। ২৯ এবং ৩০ তারিখে সেখানে মূল অনুষ্ঠান স্থলে তিনটি হ্যাঙ্গারে মোট বারো হাজার মানুষের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার জন্য রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে এলইডি টিভি বসানো হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। ভিড় এড়াতে ভিআইপি দের যাতায়াতের উপরে নিয়ন্ত্রণের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে (Firhad Hakim) কলকাতা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রিসভার সদস্য পুলক রায়,চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সুজিত বসু, ইন্দ্রনীল সেন, অরূপ বিশ্বাস ও স্নেহাশীষ চক্রবর্তীকে দীঘায় সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার উপরে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষদের বিনামূল্যে থাকার জন্য অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করা হবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। সমুদ্রে স্নান করার সময় যেন কোন দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের দলগুলিকে সতর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে।
মন্দির সূচনার সময়কালঃ
প্রাণ প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগে ২৯ তারিখে মন্দিরে হোম যজ্ঞ এর আয়োজন করা হবে।যজ্ঞ করবেন পুরীর মন্দিরের রাজেশ দ্বৈতাপতি এবং তাঁর সহযোগীরা। থাকবেন ইস্কন কলকাতা শাখার প্রধান সেবায়েত রাধারমণ দাসও।
অক্ষয় তৃতীয়ার দিন অর্থাৎ ৩০ তারিখে বেলা ১১টা নাগাদ হবে মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা। তার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে ওড়িশি নৃত্য পরিবেশন করবেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর সহযোগীরা। সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুম্বইয়ের সুরকার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, বিধায়ক তথা গায়িকা অদিতি মুন্সি।৩টে থেকে ৩টে ১০ মিনিটের মধ্যে হবে দ্বারোদ্ঘাটন।
মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে জানান পুরীর মন্দিরের খাজা বিখ্যাত হলেও দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে খাজা নয়, পাওয়া যাবে শুকনো গজা! যাতে পুণ্যার্থীরা তা কিনতে পারেন। নিয়েও যেতে পারেন। পাশাপাশি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মতোই মতোই দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের চূড়াতেও বাঁধা হবে একটি ধ্বজা (বা ধ্বজ)। সেটি বিধিসম্মত ভাবে বাঁধার জন্য পুরী থেকে একটি দল আনতে রাজেশ দ্বৈতাপতিকে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী।