সাঙ্গরুর, ১০জুন: বড় লড়াইয়ে জয়ের পরেও, শেষ অবধি জীবনযুদ্ধে হারতে হল দু বছরের ছোট্ট ফতেবীর সিং (Fatehveer Singh)-কে। আজ সকাল ৫টা নাগাদ ১৫০ ফুট কুয়ো থেকে উদ্ধার করা হয় ফতেবীরকে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফতেবীর স্থানীয় একটি মাঠে খেলতে গিয়ে পরিত্যক্ত একটি কুয়োর নিচে পড়ে যায়। তারপর দীর্ঘ ১০৯ ঘণ্টা পর উদ্ধার হয়েছিল দু বছরের ছোট্ট পঞ্জাবের ফতেবীর। উদ্ধারের পর তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার কারণে অসুস্থ ছোট্ট শরীর আর যুদ্ধ করতে পারল না। ফতেবীরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ডাক্তাররা। গতকালই আবার ফতেবীরের দু বছরের জন্মদিন ছিল।
ফতেবীরের দাদু চোখে জল নিয়ে সবাইকে জানান, '' আমাদের সবাইকে ছেড়ে ছোট্ট ফতেবীর চলে গিয়েছে।'' ফতেবীরের মৃত্য়ুতে গোটা এলাকায় কান্নার রব। অথচ আজ তার উদ্ধার হওয়ার পর থেকে সকলের মুখে ছিল যুদ্ধ জয়ের হাসি। কিন্তু সেটাই বদলে গেল শোকে। দেখুন আজ সকালে কীভাবে উদ্ধার করা হয়েছিল ফতেবীরকে। আরও পড়ুন- হাজারিবাগে বাসের সঙ্গে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, মৃত ১১, জখম ২৫
#WATCH Punjab: Two-year-old Fatehveer Singh, who had fallen into a borewell in Sangrur, rescued after almost 109-hour long rescue operation. He has been taken to a hospital. pic.twitter.com/VH6xSZ4rPV
— ANI (@ANI) June 11, 2019
সময় যত বাড়ছিল উদ্বেগও বাড়ছিল। রবিবার স্থানীয় প্রশাসন জোরকদমে উদ্ধার কাজের দাবি করেছিল ঠিকই, তবে সোমবার দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে উদ্ধার কাজের গতি অনেকটা বাড়ে। তবু কিছুতেই ফতেবীরের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছিল না। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটের সময় একমাত্র সন্তান ফতেবীরকে স্থানীয় একটি মাঠে খেলতে নিয়ে গিয়েছিলেন তার মা। সেসময় আচমকা একটি পরিত্যক্ত একটি কুয়োর নিচে পড়ে যায় শিশুটি। তার মা অনেক চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারেনি। কুয়োটির উপরে একটি কাপড় চাপা দেওয়া থাকায় সেটি কারোর নজরে পড়েনি বলেই মনে করা হচ্ছে। এই দুর্ঘটনার খবর পেয়েই তাকে উদ্ধারের সবরকম চেষ্টা করেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু, কিছুতেই সাফল্য আসছিল না। খবর পেয়ে শুক্রবার সকাল থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ)। শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখতে কুয়োটির ১২৫ ফুট গভীর পর্যন্ত অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করে তারা।
গতকাল এই সাঙ্গরুর ডেপুটি কমিশনার ঘনশ্যাম থোরি বলেছিলেন, “উদ্ধার কাজের একদম শেষপর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছি আমরা। আজকেই শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। শুক্রবার শিশুটির কাছ পর্যন্ত অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হলেও কোনও খাবার দেওয়া যায়নি। প্রথমে শিশুটি অচৈতন্য হয়ে পড়লেও শনিবার নিচে পাঠানো ক্যামেরার মাধ্যমে তাকে নড়াচড়া করতে দেখা গিয়েছে। তবে এর আগে কোথাও এত গভীর গর্তে পড়ে থাকা কোনও শিশুকে উদ্ধারের চেষ্টা হয়েছে বলে মনে হয় না। কিছুদিন আগে হরিয়ানার হিসারে যে ঘটনাটি ঘটেছিল তাতে কুয়োর গভীরতা আরও কম ছিল।”