আজই শেষ হবে প্যানের সঙ্গে আধার কার্ড লিঙ্কের (PAN-Aadhaar Linking) সময়সীমা।আর হাতে রয়েছে কিছু ঘণ্টা। আজকের মধ্যে লিঙ্ক করা না হলে আগামীকাল( ১ জুলাই) থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে আপনার প্যান কার্ড। সরকার ও বিশেষজ্ঞদের মতে আয়কর আইন ১৯৬১-এর অধীনে আধারের সঙ্গে প্যান কার্ড লিঙ্ক করা আবশ্যক।
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে অর্থাৎ আজকের মধ্যে প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক করতে ব্যর্থ হলে ১ জুলাই থেকে ১০০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। প্যান ও আধার লিঙ্ক না থাকলে করদাতার আয়কর রিটার্নও আটকে রাখা হবে। আরেকটি বড় অসুবিধা হল আপনার থেকে বেশি টিসিএস (Tax Collected at Source) ও টিডিএস (Tax Deducted at Source) চার্জ করা হবে।
বাড়িতে বসে অনলাইনে এই লিঙ্কের কাজটা করে ফেলুন-
- প্রথমে যেতে হবে ইনকাম ট্যাক্স ই-ফাইলিং( e-filing) পোর্টালে।
- https:// incometaxindiaefiling.gov.in এ তার আগে রেজিস্ট্রেশন করে ইউজার আইডি, পাসওয়ার্ড ও জন্ম তারিখ দিয়ে লগ ইন করতে হবে। ইউজার আই ডি (User ID) হবে প্যান নম্বর।
- তারপরেই একটি পপ আপ (Pop Up) উইন্ডো খুলে যাবে।
- প্যান ও আধার লিঙ্কের তথ্য দিয়ে। লিঙ্কের জন্য প্রোফাইল সেটিংসে গিয়ে link Adhaar অপশনে ক্লিক করতে হবে। যা যা তথ্য চাওয়া হয়েছে তা দিতে হবে, একবার দেখে নিয়ে হবে যাবতীয় তথ্য ঠিক রয়েছে কিনা, বানান ঠিক রয়েছে কিনা।আধারে উল্লিখিত তথ্যের সঙ্গে স্ক্রিনে থাকা PAN-এর বিবরণ যাচাই করে নেওয়া জরুরি।
- যদি তথ্যের কোন একটিতেও অমিল মেলে, তাহলে নথির যে কোনও একটিতে একই সংশোধন করতে হবে।সব তথ্য় দেওয়া হয়ে গেলে Link Now -তে ক্লিক করতে হবে। তাহলেই হয়ে যাবে পুরো প্রক্রিয়া।
https://www.utiitsl.com/ বা https://www.egov-nsdl.co.in এই দুটি সাইটেও প্যান ও আধার লিঙ্ক করা যাবে।
প্যান-আধার লিঙ্ক না হলে যে ২২ সরকারি পরিষেবা পাওয়া যাবে না
(1) প্যান কার্ড বাতিল হয়ে যাওয়ায় কোনরকম সঞ্চয় বা বিনিয়োগ করতে পারবেন না। সমস্ত সরকারি প্রকল্পের টাকা আটকে যাবে।
(2) ভারতের কোনও ব্যাঙ্কেই নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না, কারণ আপনার কাছে বৈধ প্যান কার্ড থাকবে না।
(3) প্যান-আধার লিঙ্ক না থাকলে মিউচুয়াল ফান্ডে কোনরকম বিনিয়োগ করা যাবে না।
(4) ব্যাঙ্কের পাসবুক আপডেট করা, ব্যালেন্স চেক করার ক্ষেত্রেও অসুবিধেয় পড়তে হবে।
(5) ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট থাকলে সেটি সাময়িকভাবে ফ্রিজ হয়ে যাবে, চাইলেও সেই টাকা তুলতে পারবেন না।
(6) প্যান কার্ড বাতিল হয়ে যাওয়ার ফলে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে না।
(7) নিজের নামে কোনও ট্রাস্ট বা এনজিও রেজিস্টার করতে পারবেন না। কোনও নথিবদ্ধ সংস্থার বোর্ডে থাকলে রিনিউয়ের সময় আপনার নাম কাটা পড়বে।
(8) সম্পত্তি কেনা-বেচা আটকে যেতে পারে। কারণ বর্তমানে এক্ষেত্রেও প্যান কার্ড মাস্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া লেনদেনের অর্থ ব্যাঙ্কে ঢুকলেও তা আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না।
(9) ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না।
(10) মাসের শেষে বেতন বা পেনশনের অর্থ পেতে সমস্যা হতে পারে। আপনার সংস্থা অ্যাকাউন্টে অর্থ প্রদান করলেও তা তোলার ক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়বেন আপনি। ফলে সারা মাস কাজ করলেও মাসের শেষে হাত ফাঁকা থাকবে।
(11) এই লিঙ্ক প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ না হলে আপনার বৈধ প্যান কার্ড থাকবে না। আর তার ফলে নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় আপনার ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে না। ফলে চাকরি পেয়েও তা হাতছাড়া হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে। এটা সরকারি-বেসরকারি দুই ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে।
(12) যেকোনও ধরনের বিমার প্রিমিয়াম জমা দেওয়া বা ক্লেম করে তার অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে।
(13) যেকোনও ধরনের লোন পাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
(14) পুরনো গাড়ি বিক্রি করতে গেলেও সমস্যার মুখে পড়তে হবে।
(15) প্যান কার্ড না থাকায় নতুন ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
(16) ব্যাঙ্কের ড্রাফট এবং চেক সংক্রান্ত যে কোনও কাজে অসুবিধে হবে। আপনার চেক ক্লিয়ারেন্স বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
(17) ৫০ হাজার টাকার বেশি পেমেন্ট দিতে বা নিতে পারবেন না। কারণ এই অর্থের বেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে বৈধ প্যান কার্ড থাকাটা বাধ্যতামূলক।
(18) ব্যাঙ্কে সম্পত্তি মর্টগেজ রেখেও আর লোন পাবেন না।
(19) প্যান-আধার লিঙ্ক না হলে ব্যাঙ্ক সহ সমস্ত আর্থিক সংস্থার কেওয়াইসি প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ হবে না। ফলে সেখানেও আপনার অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হবে।
(20) কোনও অনলাইন পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমেও আর টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন না।
(21) পেমেন্ট করার ক্ষেত্রে অনলাইন জালিয়াতি হলে বা কোনও লেনদেন অসফল হলে টাকা ফেরত পাওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা থাকবে না। কারণ আপনার বৈধ প্যান কার্ড না থাকায় প্রদেয় অর্থের পেমেন্ট প্রসেস ট্র্যাক করা সম্ভব হবে না।
(22) প্যান নম্বর বাতিল হলে বার্ধক্য ভাতা, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, আবাস যোজনার মত সামাজিক প্রকল্পের অর্থ পাওয়াও বন্ধ হয়ে যাবে।