প্রতি বছর ২৫ শে ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে এই দিনটিতে উৎসব পালন করা হয়। এই দিনে স্কুল, কলেজ, সরকারি-বেসরকারি অফিস ছুটি থাকে।বিশ্বজুড়ে নানা শহর থেকে শুরু করে ঘর-বাড়ি এই দিনে আলোয় সেজে ওঠে। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা শহরও এর ব্যতিক্রম নয়। ক্রিস্টমাসের এই দিনটিতে কলকাতা শহরকে নতুন সাজে দেখতে পাওয়া যায়। আপনিও এই দিনে ঘুরে দেখতে পারেন কলকাতা শহরকে। প্রশ্ন হল কলকাতা শহরে কোথায় যাবেন ঘুরতে যা আপনাকে মুগ্ধ করবে?
কলকাতা শহর হল একটি ঐতিহাসিক শহর। নানা ধর্মের মানুষ এখানে বসবাস করে।তাই কলকাতা শহরে অনেক নামকরা গির্জা আছে। তবে তার মধ্যে নামকরা ৫টি গির্জা আপনি ঘুরে দেখতে পারেন। খ্রিস্টমাসে এই গির্জাগুলিকে খুব সুন্দর করে ফুল ও আলো দিয়ে সাজানো হয়। আসুন জেনে নিন কি নাম সেই গির্জাগুলির।
সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল( St Paul's Cathedral): সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল গির্জাটি হল কলকাতা শহরের এক অন্যতম বিখ্যাত গির্জা। এটি ক্যাথেড্রাল রোডের উপর অবস্থিত।গির্জাটি ইন্দো-গথিক স্থাপত্যের গর্ব। ১৮৪৭ সালের শুরুতে এই গির্জাটি এশিয়ার প্রথম এপিস্কোপাল চার্চ( Episcopal Church) হিসেবে বিবেচিত হত। সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল ২৪৭ ফুট লম্বা এবং ৮১ ফুট প্রস্থ এবং গির্জার অভ্যন্তরীণ অংশ ১১৪ ফুট। এটি কলকাতার বৃহত্তম গির্জা।
মার থমা সিরিয়ান চার্চ( Mar Thoma Syrian Church) : কলকাতার আর একটি অন্যতম বিখ্যাত গির্জা হল মার থমা সিরিয়ান গির্জা। মার থমা সিরিয়ান চার্চ যা "মালাঙ্কারা মার থমা সিরিয়ান চার্চ"(Malankara Mar Thoma Syrian Church) নামেও পরিচিত। এই গির্জাটি প্রাচীন সিরিয়াক হাই চার্চের (Ancient syrian high church) ঐতিহ্যকে অনুসরণ করে। ব্রিটিশ আমলে এই গির্জার আমুল পরিবর্তণ ঘটে, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে থাকে।
চার্চ অফ ক্রাইস্ট দ্য কিং(Church Of Christ the king ): চার্চ অফ ক্রাইস্ট দ্য কিং হল কলকাতার আর একটি আকর্ষণীয় গির্জা। এটি সৈয়দ আমীর আলি অ্যাভিনিউ, পার্ক সার্কাসে অবস্থিত। গির্জাটিতে প্রবেশের পর আপনার মন শান্তিতে ভরে যাবে। এই গির্জাটি এত বড় যে শত শত লোক এখানে এক সঙ্গে বসতে পারে। এই গির্জাটি দেখার উপযুক্ত সময় হল খ্রিস্টমাসের দিনটি। কারণ এই সময় এই গির্জাটিকে আলো দিয়ে খুব সুন্দোর করে সাজানো হয়ে থাকে। এখানে মধ্য রাতে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ভুলবেন না। এই অনুষ্ঠান আপনাকে এক আলাদাই আনন্দ প্রদান করবে।
সেন্ট জনস চার্চ( St John's Church) : সেন্ট জনস চার্চ ১৭৮৭ সালে নির্মিত হয়েছিল যা কলকাতার তৃতীয় প্রাচীনতম গির্জ। ইতিহাস অনুসারে সেন্ট জনস চার্চটিকে ব্রিটিশের শাসনকালে ভারতের রাজধানী কলকাতাতে প্রথম জনসাধারণের জন্য নির্মিত করা হয়। এই গির্জাটি নিওক্লাসিক্যাল স্থাপত্য শৈলী অনুসরণে তৈরী যেখানে এক বিশাল ঘড়ি স্পায়ার ক্ষতকে শোভিত করে চলেছে। এই গির্জা কমপ্লেক্সের ভেতরে আপনার দেখার মতো কিছু উল্লেখযোগ্য জিনিস আছে , যেমন- ব্ল্যাক হোল মনুমেন্ট এবং দ্বিতীয় রোহিলা ওয়ার মেমোরিয়াল। এই ভবন দুটি পাথর এবং ইটের দ্বারা নির্মিত হওয়ায় বাসিন্দাদের কাছে এটি পাথুরে গির্জা (Stone Church) নামে পরিচিত।
সেন্ট অ্যাল্ডারু চার্চ(St Andaew's Church) : সেন্ট অ্যাল্ডারু চার্চ কলকাতার সবচেয়ে লম্বা এবং বিশাল চূড়া বিশিষ্ট্য একটি গির্জা। এটি কলকাতার ব্রোবোর্ন রোডে অবস্থিত। ঐতিহাসিক নথি অনুসারে ১৮১৮ সালে থেকে এই গির্জাটি জনসাধারণের অধীনে চলে আসে। পরবর্তীকালে এই গির্জাটি পর্যটনদের জন্য একটি ঘোরার জায়গায় পরিণত হয়।