নয়া দিল্লি, ১২ জুন: বায়ু দূষণ (Air Pollution)-এ চরম সঙ্কটে ভারত। ভয়ঙ্কর বায়ুদূষণের কারণে ভারতে বসবাসকারী মানুষদের আয়ু প্রায় আড়াই বছর বা ৩০ মাস কমে যাচ্ছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। বিজ্ঞান এবং পরিবেশ সংস্থা কেন্দ্র-সিএসই (CSE)-র সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে ঘর এবং বাইরের বায়ু দূষণের ফলে দেশের নানা প্রান্তের মানুষের নানা ধরনের মারাত্মক রোগ হচ্ছে।
ভারতে মৃত্যুর তৃতীয় সবচেয়ে বড় কারণ হল বায়ু দূষণ। ধুমপান জনিত মৃত্যুর কারণের পরেই থাকছে বায়ু দূষণ। আর এর কারণ হল বাইরে পার্টিকুলেট ম্যাটার বা PM-এর মাত্রা ২.৫, ওজন এবং ঘরের বায়ু দূষণ। সব মিলিয়ে বায়ূ দূষণের গ্রাসে ভারতে মানুষের আয়ু গড়ে আড়াই বছর কমে যাচ্ছে। যা দুনিয়ার মানুষের গড় আয়ুর চেয়ে অন্তত ২০ মাস কম। আরও পড়ুন- তীব্র গতিতে ধেয়ে আসছে ঘূর্নিঝড় ‘বায়ু’, আর কয়েকঘণ্টার মধ্যেই আছড়ে পড়বে গুজরাট উপকূলে
তার মানে এখন ভারতে যেসব শিশুর জন্ম হচ্ছে তারা বাকি দুনিয়ার চেয়ে ২০ মাস আয়ু কম নিয়ে জন্মাচ্ছে। আর শিশুটির আয়ু কমের পিছনে কাজ করছে বায়ু দূষণ। এসবই বিস্তারিতভাবে পরিসংখ্যানের মাধ্যমে ব্যাখা করা হয়েছে CSE-র রিপোর্টে। দিল্লি, মুম্বই সহ দেশের মেট্রো শহরগুলিতে বায়ু দূষণ সহনশীলতার মাত্রা ছাড়িয়েছে।
বছর দুয়েক আগে ব্রিটেনের মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটের করা বায়ু দূষণের ওপর এক গবেষণা প্রকাশিত হয়েছিল। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল বায়ু দূষণ ভারতে এমন মারাত্মক জায়গায় গিয়েছে, যে এখানে মিনিটে দু জন মানুষ বায়ু দূষণের কারণে মারা যাচ্ছেন।
২০১০ সালে সংগ্রহ করা তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই গবেষণাটি করা হয়েছিল। ল্যানসেটের গবেষণা অনুযায়ী, বায়ু দূষণের কারণে সারা বিশ্বে প্রতিবছর ২৭ থেকে ৩০ লাখ অপরিণত শিশুর জন্ম হয়। এর মধ্যে শুধু দক্ষিণ এশিয়াতেই জন্ম নেয় ১৬ লাখ শিশু। সেখানে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণ ও জলবায়ুর পরিবর্তন পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। আর এ দুটিকে একসঙ্গেই রুখে দিতে হবে। পৃথিবীর যে ২০টি শহর সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণের মধ্যে আছে তার মধ্যে ভারতের ১৪টি শহর রয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যেই এই দূষণ ভারতের শিশুদের স্বাস্থের ওপরে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। আর ২০৫০ সালের মধ্যে দূষণের ফলে মৃত্যুর সংখ্যার দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়া শীর্ষে থাকবে।