প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Photo Credits: PTI/File)

নতুন দিল্লি, ২৬ ফেব্রুয়ারি: দিল্লিতে হিংসা (Delhi Violence) নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। অশান্ত দিল্লিতে শান্তির বার্তা দিয়ে টুইট করলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি টুইটে জানান, শান্তি এবং একতা বজায় রাখা আমাদের প্রধান কর্তব্য। দিল্লির ভাই-বোনেদের অনুরোধ শান্তি এবং ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখুন। দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শান্তি ফেরাতে গ্রাউন্ড জিরোয় পুলিশ এবং অন্যান্য এজেন্সি কাজ করে চলছে। দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ২১ ছুঁয়েছে। আহতর সংখ্যা দুশোর কাছাকাছি।

আজ প্রধানমন্ত্রী টুইট করে। তিনি লেখেন, "দিল্লির বিভিন্ন অঞ্চলে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিস্তৃস্ত পর্যালোচনা করেছি। পুলিশ ও অন্য সংস্থাগুলি শান্তি ও স্বাভাবিকতা নিশ্চিত করতে গ্রাউন্ড জিরোয় কাজ করছে। শান্তি ও সম্প্রীতি আমাদের নৈতিকতার কেন্দ্রস্থল। আমি দিল্লির বোন এবং ভাইদের প্রতি সর্বদা শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার জন্য আবেদন করছি। দিল্লিতে শান্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানো উচিত।" আরও পড়ুন: Ankit Sharma: অগ্নিগর্ভ দিল্লি, চাঁদবাগ এলাকা থেকে মিলল IB অফিসারের নিথর দেহ

তিনদিন ধরে চলা হিংসার বলি প্রায় ২০। আজ সকালেই সাতজনের মৃত্যু হয়। আহতের সংখ্যা অন্তত ১৮৯। গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে (GTB Hospital) তাদের চিকিৎসা চলছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে জারি ১৪৪ ধারা। বন্ধ দোকানপাট। সরকারি স্কুল, কলেজ বন্ধ। পিছিয়ে গেছে সিবিএসসি পরীক্ষা। চার জায়গায় জারি রয়েছে কার্ফু (Curfew)। এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) এবং মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল Arvind Kejriwal)। সিএএ সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। সিলামপুর, জাফরাবাদ, মৌজপুর, ভজনপুরা, চাঁদবাগ ইত্যদি জায়গায় দোকানপাট জ্বালিয়ে তাণ্ডব করেছে বিক্ষোভকারীরা। পাথর, ইটবৃষ্টি, রাস্তায় সাধারণ মাস্কে যথেচ্ছভাবে মেরেছে তারা। যার ফলে প্রাণ গেছে বহু নিরপরাধ মানুষের। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতে গৃহবন্দী এলাকার মানুষ। আতঙ্কে বাড়ির বাইরে বেরোতে পারছেন না।

মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল লেখেন,"রাতভর অনেকে মানুষের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। সবরকম চেষ্টা সত্ত্বেও, এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ। মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফেরানো যায়নি। এ বার সেনা নামানো উচিত। উচিত ক্ষতিগ্রস্ত সব জায়গায় অবিলম্বে কার্ফু জারি করা। এই ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি আমি।’’

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে দিল্লির হিংসা নিয়ন্ত্রণে আনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মন্ত্রিসভাকে পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্রিফ করবেন। মঙ্গলবার রাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তিনি সিলামপুর, জাফরাবাদ, মৌজপুর ও গোকুলপুরী চক এলাকা পরিদর্শন করেছেন। গতকাল মধ্যরাতে দিল্লি হাইকোর্টের জরুরি শুনানি হয়। দিল্লিতে হিংসায় আহতদের নিরাপদে হাসপাতালে পৌঁছানো নিশ্চিত করার জন্য দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়া আহতরা যাতে দ্রুত চিকিত্সা পায় তাও পুলিশকে নিশ্চিত করতে বলেছে হাইকোর্ট।