নতুন দিল্লি, ৫ ফেব্রুয়ারি: চণ্ডিগড় মেয়র নির্বাচন নিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল, রাহুল গান্ধী সহ বিরোদী নেতারা যেমন শব্দ ব্যবহার করেছিলেন, ঠিক তেমনই করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। চণ্ডিগড় মেয়র নির্বাচনে গণতন্ত্রকে ঠাট্টা করা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে বলে জানাল সুপ্রিম কোর্ট। চণ্ডিগড় মেয়র নির্বাচনে INDIA-জোটের হারকে বড় করে দেখাচ্ছিল বিজেপি। এবার সেটাই তাদের বড় অস্বস্তির জায়গা হয়ে গেল।
সংখ্যা সঙ্গে না থাকলেও চণ্ডিগড় মেয়র নির্বাচনে কংগ্রেস-আপ জোটকে হারিয়ে জিতে ছিলেন বিজেপির প্রার্থীরা। কিন্তু সেই নির্বাচনে বিরোধীদের আটটি ভোট বাতিল করে, বিজেপিকে অবৈধভাবে জিতিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মাসির বিরুদ্ধে। এক ভিডিয়ো ফুটেজে প্রিসাইডিং অফিসারের আচরণ সন্দেহজনক দেখিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেই অভিযোগে সিলমোহর দিল।
দেখুন খবরটি
#SupremeCourt comes down heavily on the Presiding Officer who held the #Chandigarh Mayor elections.
"It is obvious that he defaced the ballot papers. Is this the way he conducts the elections? This is a mockery of democracy. This is a murder of democracy. This man should be… pic.twitter.com/9IUdl5ZVNP
— Live Law (@LiveLawIndia) February 5, 2024
প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যালট পেপারে কারচুপি করার অভিযোগ এবং কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের তত্ত্বাবধানে পুনর্নির্বাচন করার দাবি তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় আম আদমি পার্টি। সুপ্রিম কোর্ট এই ইস্যুতে তীব্র ভর্তসনা করল নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসারের। চণ্ডিগড় মেয়র নির্বাচনে অস্বচ্ছতা নিয়ে, গণতন্ত্রকে হত্য়া দেব না। এমন তীব্র প্রতিক্রিয়াও দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
প্রিসাইডিং অফিসারের সেই বিতর্কিত ভিডিয়ো
#SupremeCourt comes down heavily on the Presiding Officer who held the #Chandigarh Mayor elections.
"It is obvious that he defaced the ballot papers. Is this the way he conducts the elections? This is a mockery of democracy. This is a murder of democracy. This man should be… pic.twitter.com/9IUdl5ZVNP
— Live Law (@LiveLawIndia) February 5, 2024
প্রধান বিচারপতি বলেন," চণ্ডিগড় নির্বাচনে এই ভাবে উনি (সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসার) ভোট করান? এটা গণতন্ত্রকে নিয়ে ঠাট্টা করা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না৷ গণতন্ত্রের খুন৷ আমরা স্তম্ভিত৷ ওই ব্যক্তির শাস্তি হওয়া উচিত৷ এটা একটা রিটার্নিং অফিসারের কাজ?"
গত ৩০ জানুয়ারি হওয়া কেন্দ্রশাসিত চণ্ডিগড় মেয়র নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার পুরোপুরি বিজেপির পক্ষ নিয়ে কাজ করেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। কংগ্রেস ও আপ জোটের ৮টি ভোট বাতিল করেছিলেন সেই প্রিসাইডিং অফিসার। ফলে ১৬-১২ ভোটে মেয়র পদে জিতে যান বিজেপি প্রার্থী মনোজ সোনকার। চণ্ডিগড় পৌরসভায় আপের ১২ জন ও কংগ্রেসের ৮ জন প্রতিনিধি ছিলেন। সেখানে বিজেপির ছিল ১৬ জন। সব ঠিকঠাক থাকলে আপ-কংগ্রেস জোটের মেয়র পদপ্রার্থী কুলদীপ সিংয়ের জয় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু ভোট গণনার সময় ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি ঘোষণা করেন আপ-কংগ্রেসের ৮ জনের ভোট বাতিল করা হল, ঠিকমত নিয়ম না মানায়। তারপরই জানানো হয় চণ্ডিগড়ে মেয়র নির্বাচনে আপের কুলদীপ সিংকে ১৬-১২ ব্যবধানে হারিয়েছেন বিজেপির মনোজ সোনকার। মোট ৩৬টি ভোট ছিল। সেখানে বাতিল হয় ৮টি ভোট।
ভোটের ফল ঘোষণার পরেই তীব্র বিরোধ ফেটে পড়েছিলেন আপ-কংগ্রেস নেতারা। যেভাবে বিজেপিকে অন্যায়ভাবে জেতানো হল তা গণতন্ত্রের কালো দিন বলে টুইট করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও এই ইস্য়ুতে বিজেপির নিন্দা করা হয়েছে। বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, আপ-কংগ্রেসের নেতারা জোট মেনে নিতে না পারায় ইচ্ছা করে ভোট নষ্ট করেছেন। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ নেই।
প্রসঙ্গত, বিজেপি-কে হারাতে কংগ্রেস ও আপ জোট বেঁধে মেয়র ও ডেপুটি মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছিল। মেয়র পদে প্রার্থী ছিল আপের, আর দুটি ডেপুটি মেয়র পদে বিজেপির। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডিগড়ে গত দুটি লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বিজেপির তারকা প্রার্থী কিরণ খের। কংগ্রেস ও আপের ভোট ভাগাভাগিতে গত দুটি লোকসভাতে বিজেপির জয় সহজ হয়েছিল।