Bhopal Gas Tragedy: মানবশৃঙ্খল গড়ে প্রতিবাদ ভোপাল গ্যাসকাণ্ডের ভুক্তভোগীদের
মানবশৃঙ্খল গড়ে প্রতিবাদ ভোপাল গ্যাসকাণ্ডের ভুক্তভোগীদের (Photo Credits: PTI)

ভোপাল, ২ ডিসেম্বর: ১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বরের রাত। আর পাঁচটা দিনের মতোই ঘুমের চাদরে মুড়েছিল মধ্যপ্রদেশের ভোপালে (Madhya Pradesh)। বোঝার উপায় ছিল না নেমে আসতে চলেছে দুরন্ত বিপর্যয়। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘুমন্ত নগরীর বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছিল বিষ (Poison)। ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানা থেকে বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছিল বিষাক্ত মিথাইল আইসোসায়ানেট। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখে জ্বলুনি-শ্বাসকষ্ট প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করেছিল ভোপালবাসীর জীবনে। ধড়ফরিয়ে বিছানায় উঠে বসে পড়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। বাকিটা সকলেরই জানা।

সে বছর ২ ডিসেম্বর রাতে কারখানার ‘C plant’-এ সঞ্চিত মিথাইল আইসোসায়ানেটের ট্যাঙ্কে কোনওভাবে জল মিশে যায়। তারপরই শুরু হয় মারাত্মক রাসায়নিক বিক্রিয়া। সেখান থেকে উদ্ভূত ভয়ঙ্কর তাপ-চাপে খুলে যায় প্রায় ৪০ মেট্রিক টনের ট্যাঙ্ক। মারণ মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে। উৎপন্ন হয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড সহ অন্যান্য ক্ষতিকর গ্যাস। চোখজ্বালা, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ত্বকের প্রদাহে আক্রান্ত হন ভোপালের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভোপাল গ্যাসকাণ্ডে মারা যান প্রায় ৩ হাজার ৭৮৭জন মানুষ। শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন ৫ লক্ষ ৫৮ হাজার জন। যারমধ্যে ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে স্থায়ী পঙ্গুত্বের শিকার হন ৩ হাজার ৯০০ জন। তদন্তে জানা যায়, বিপজ্জনক রাসায়নিক দ্রব্য রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে অসতর্কতাই এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। যার কারণ ছোট ছোট ড্রামের বদলে রাসায়নিক রাখা হত বড় বড় ট্যাঙ্কে (Tank)। ক্ষয়ে যাচ্ছিল পাইপলাইনও। ঘাটতি ছিল বিপর্যয় মোকাবিলার পরিচালন ব্যবস্থাতেও। আশ্চর্যজনকভাবে বহু বছর ধরে মামলা চললেও কোনও সাজা হয়নি ইউনিয়ন কার্বাইডের তৎকালীন শীর্ষ কর্তা ওয়ারেন অ্যাণ্ডারসনের। কিন্তু ২০১৪ সালে আমেরিকায় ৯২ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর। অ্যাণ্ডারসনের সঙ্গেই কবরে চলে যায় ওই দুর্ঘটনার অনেক অজানা তথ্য। হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী,  প্রায় সাড়ে তিন দশক আগে আজকের তারিখের রাতেই আধুনিক শিল্পদূষণ প্রাণ কেড়ে নিয়েছিলেন ভোপালের প্রায় ৩ হাজার মানুষের। আজও ওই বিষাক্ত গ্যাসের বলি হচ্ছেন অঞ্চলের অনেকেই। আরও পড়ুন: Devendra Fadnavis: ৪০ হাজার কোটি সরাতেই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ! বিস্ফোরক দাবি বিজেপি নেতা অনন্ত হেগড়ের

অভিযোগ, ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিশ্রুতি পেলেও প্রতিকার পাননি। গতকাল রবিবার এই ঘটনায় প্রশাসনিক গড়িমসির প্রতিবাদে অভিশপ্ত কারখানাটির চারপাশে মানবশৃঙ্খল গড়ে তোলেন স্থানীয়রা (Locals)। তাঁরা দাবি জানান, দুর্ঘটনার পর এলাকায় ছড়িয়ে পরা বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ সাফ করুক ইউনিয়ন কার্বাইডের বর্তমান মালিক ‘ডউ কেমিক্যালস।’ পাশাপাশি সংস্থাটির কাছ থেকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের (Compensation) দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘দুর্ঘটনাস্থলে স্মৃতিসৌধ বানিয়ে আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে সরকার নাটক করছে।’