সোনু সুদ (Photo Credits: Instagram)

পথদুর্ঘটনার জেরে মাস ছয়েক ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী বছর বাইশের তরুণীর কাছে সোনু সুদ (Sonu Sood) এক দেবদূতের নাম। কেননা, ছাপোষা মিশ্র পরিবারের পক্ষে মেয়ে প্রজ্ঞার চিকিৎসার খরচ চালানো সম্ভব ছিল না। উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের পাদ্রিবাজারের কাছে প্রজ্ঞাদের বাড়ি। বাবা বিজয় মিশ্র একজন পুরোহিত। গত ফেব্রুয়ারি মাসে পথদুর্ঘটনায় প্রজ্ঞার দুই পা মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাঁটুজোড়া অকেজো হয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা জানান, অস্ত্রোপচার ছাড়া প্রজ্ঞার পক্ষে আর চলাফেরা করা সম্ভব নয়। এদিকে চিকিৎসার খরচ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। সামান্য পুরোহিত বাবা তরুণী মেয়ের অপারেশনের জন্য এই টাকাটা জোগাড় করতে পারেননি। পরিজনরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। গত ছ’মাস ধরে আইনের ছাত্রী প্রজ্ঞা তাই শয্যাশায়ী।

বেশ কয়েকজন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকে বলে কয়ে একবার ব্যর্থ প্রচেষ্টাও করেছেন ওই তরুণী। তবে লাভ কিছু হয়নি। কয়েকদিন আগে আচমকাই অভিনেতা সোনু সুদকে টুইট করে নিজের দুরবস্থার কথা জানান প্রজ্ঞা মিশ্র। রগিবের মসীহা সোনু সুদ, কিন্তু প্রজ্ঞার ডাককে উপেক্ষা করেননি। সমস্যাটি জেনে নিয়ে যোগাযোগ করেন চিকিৎসকের সঙ্গে। তারপর প্রাথমিক কথাবার্তা সেরেই প্রজ্ঞাকে জানান দিল্লিতে আসতে হবে তাঁদের। তিনজনের ট্রেনের টিকিটেরও বন্দোবস্ত করেন সোনু সুদ। বুধবার ট্রেন থেকে নামর পরেই অভিনেতার লোকজন তাঁদের এসকর্ট করে সোজা গাজিয়াবাদের এক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই সেদিন প্রজ্ঞার দুই হাঁটুর সফল অস্ত্রোপচার হয়। দীর্ঘ ছ’মাস পরে বৃহস্পতিবারের সকাল প্রজ্ঞার কাছে নতুন দিনের বার্তা বয়ে আনল। ওয়াকারের সাহায্যে হাসপাতালেই কয়েক পা হাঁটলেন তিনি। মেয়েকে হাঁটতে দেখে মিশ্র দম্পতির চোখে জল। সোনু সুদ তাঁদের কাছে দেবদূত। প্রজ্ঞার মুখে হাসি দেখার পর থেকে বাবা-মা অনবরত সোনু সুদকে আশীর্বাদ করে চলেছেন। যিনি তাঁদের একমাত্র মেয়েকে নতুন জীবন দিয়েছেন। আরও পড়ুন-Jammu And Kashmir: স্বাধীনতা দিবসের আগের দিনই শ্রীনগরে জঙ্গি হামলায় শহিদ ২ পুলিশকর্মী, আহত ১

এই প্রসঙ্গে বিজয় মিশ্র বলেন, আমরা দিল্লিতে পৌঁছালে সোনু সুদের সহকারীরাই স্টেশন থেকে সোজা আমাদের হাসপাতালে নিয়ে যান। সোনু সুদ আমাদের কাছে ভগবানের মতো। আজকের দিনে তাঁর মতো দেবদূতের দেখা পাওয়া সত্যিই কঠিন ব্যাপার। তাঁকে দেওয়ার মতো আমার কাছে কিছুই নেই। তবে প্রাণভরে আশীর্বাদ করছি যাতে তাঁর জীবন আনন্দে ভরে ওঠে। ভবিষ্যৎ সুখের হয়। অনেক দিন পর হাঁটতে পেরে প্রজ্ঞার বক্তব্য, “আমার জন্য সোনু সুদ ভগবান। আমি ঠিক করেই নিয়েছি, যখন উপার্জন করব তখন টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে না পারা ছেলেমেয়েদের দিকে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব।” লকডাউনে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে বাস বাড়া করেছেন সোনু সুদ। ট্রেনের টিকিট কেটে অগুন্তি পরিযায়ী শ্রমিককে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। এমনকী, চার্টার্ড ফ্লাইটেও পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে পাঠিয়েছেন তিনি।