মস্কো, ১৬ জানুয়ারি: রাশিয়া সরকারের করবিভাগের কর্তাকেই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister) হিসেবে নিযুক্ত করলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। তাঁর নাম মিখায়েল মিশুস্তিন (Mikhail Mishustin)। এই আমলা গত ১৯৯৮ সাল থেকে দেশের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০১০ সালে ফেডারেল কর পরিষেবা দপ্তরের প্রধান পদে বসেন মিখায়েল মিশুস্তিন। প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভের ইস্তফার পরেপরেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিখায়েলের নাম ঘোষণা করেন পুতিন। একইসঙ্গে সদ্য পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মেদভেদেভ প্রেসিডেন্সিয়াল নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্ব পেয়েছেন।বুধবার পার্লামেন্টে বার্ষিক অধিবেশন চলাকালীন নিজের ভাষণে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, পার্লামেন্টের শক্তি বৃদ্ধির জন্য সংবিধানে সংস্কার প্রয়োজন। এই সংস্কারের জন্য একটি গণভোটের প্রস্তাবও দেন তিনি।
উল্লেখ্য, পুতিন বলেন, “আমার মনে হয় রাশিয়ার সংবিধানে কিছু সংস্কারের প্রয়োজন। তবে এই সংস্কার হবে কি হবে না, সেই সংক্রান্ত প্রস্তাবনা গণভোটের দাবি রাখে।” জনমতকে প্রাধান্য দিয়ে রাশিয়াকে বিশ্বের দরবারে আরও শক্তিশালী করতেই এই পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন বলে জানান পুতিন। প্রেসিডেন্টের ঘোষণা এবং তার পরবর্তী ঘটনাক্রমে বিস্মিত হন অনেকেই। যদিও, ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ বলছে, এমনটা যে হতে পারে তার ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। কারণ, ২০২৪-এ প্রেসিডেন্ট পদে পুতিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সংবিধান অনুযায়ী, এই পদে পুনর্নির্বাচিত হওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নিশ্চয়ই এমন কোনও পদ কিংবা নিয়ন্ত্রণ কমিটি তৈরি করবেন যার মাধ্যমে তিনি সরকারের উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পারবেন। প্রয়োজন পড়লে ফের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতেও বসতে পারেন তিনি। আরও পড়ুন-Russian Government Resigns: রাশিয়ায় সংবিধানের সংস্কার জরুরি, পুতিনের ইচ্ছায় গোটা মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করল
Vladimir Putin nominated Head of the Federal Taxation Service Mikhail Mishustin for the post of Prime Minister https://t.co/Pu17KZ6hQ2 pic.twitter.com/U9HOgR5t6r
— President of Russia (@KremlinRussia_E) January 15, 2020
যাইহোক পুতিনের এই প্রস্তাব শোনার পরেই ইস্তফা দেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্র মেদভেদেভ। তারপরে তাঁর সরকারের অন্য মন্ত্রীরাও পদত্যাগ করেন। পদত্যাগ করার পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রেসিডেন্টের এই সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে করা হচ্ছে। নিজের ইচ্ছেমতো সংস্কার নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন তিনি। অবশ্য যদি এই প্রস্তাব সুশাসনের লক্ষ্যে হয় তাহলে তাঁকে সেই সুযোগ দেওয়া উচিত।” সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত অবশ্য বর্তমান সরকারকেই সব কাজ করতে হবে। তবে ২০১২ সাল থেকে পুতিন ও দিমিত্রি মেদভেদেভ রাশিয়ান রাজনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। তাই নতুন সরকার গঠন হলে সেখানে মেদভেদেভ যে বড়সড় ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন তা বলাই বাহুল্য।