
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি, রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার বন্দুত্বের সম্পর্ক তৈরির লক্ষ্যেই দুই সুপার পাওয়ার দেশের প্রধানের মধ্য়ে কথা হল। হোয়াইটওয়াশে বসে পুতিনের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলেই চললেন ট্রাম্প। তবে দুজনের মধ্যে ঠিক কী কথা, তা নিয়ে ঝেরে কাশল না হোয়াইটওয়াশ। পরে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হল, পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথা বেশ ইতিবাচক হয়ছে। ট্রাম্পের হয়ে বলা মার্কিন মিডিয়ায় প্রকাশ, ফোনে কথা বলে সন্তুষ্ট পুতিন যুদ্ধবিরতিতে যেতে রাজি হয়েছেন। ট্রাম্পের কথা শুনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদামির জেলেনস্কিও যুদ্ধবিরতি যেতে আগেই সম্মতি দিয়েছেন।
ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে শর্ত পুতিনের
তবে মার্কিন মিডিয়ার একাংশ পরে জানাল, পুতিন ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি মানছেন ঠিকই, কিন্তু তার ওপর নিজের বেশ কিছু শর্ত দিয়েছেন। সেই সব শর্ত ইউক্রেন মেনে নিলে, তা আসলে রাশিয়ারই জয় হবে। তবে ইউক্রেনকে কোণঠাসা করে পুতিনকে জিতিয়ে যুদ্ধবিরতিতে গেলে মার্কিন মুলুকে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা তার দেশে আরও কমে যাবে। একই ক্ষমতা পাওয়ার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা হু হু করে কমে তলানিতে যাওয়ার দিকে পা বাড়িয়ে রেখেছে। এমনই বলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সব বড় সমীক্ষা। তবু সমর্থকদের সামনে মুখ রাখতে ট্রাম্পকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ থামাতেই হবে। গাজায় এদিন ইজরায়েলের হামলায় ৪০০ জনের প্রাণ হাারনোর ঘটনায় সবচেয়ে চাপে পড়লেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কারণ ট্রাম্প ভোটের প্রতিশ্রুতিতে বলেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলেই ইজরায়েল-হামাসের যুদ্ধ পুরো থেমে যাবে। মোটের ওপর এখন যা পরিস্থিত পুতিনের শর্তে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি, আর যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইজরায়েলের হামলা প্রমাণ করছে, ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি যেন সোনার পাথরবাটি।
আমেরিকায় পুতিনের একমাত্র বন্ধু হলেন ট্রাম্প
অনেকেই বলেন, গোটা আমেরিকায় পুতিনের নাকি শুধু একজনই বন্ধু, তিনি ট্রাম্প। নিন্দুকরা বললেন, ট্রাম্প নাকি পুতিনেরই এজেন্ট। তবে সে সব শুধু হেসে মুখে প্রত্যাখান করেন ট্রাম্প। সেই ট্রাম্প নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি তিনি ক্ষমতায় আসার পরদিনই রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন। ট্রাম্প প্রায় দু মাস ধরে প্রেসিডেন্টের গদিতে বসে, তবু যুদ্ধ চলছেই। মুখ বাঁচাতে তাই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতেই হবে ট্রাম্পকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ থামাতে চাইছেন পুতিনের শর্তে। সেটা আগেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।
ইউক্রেনকে দূরে সরিয়েছেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের আসনে ফেরার পর রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। জো বাইডে ইউক্রেনকে যতটা কাছে টেনেছিলেন, ট্রাম্প ততটাই দূরে সরিয়েছেন জেলেনস্কির দেশকে। বেশ কিছু সময় পুতিনের সুরেই ইউক্রেনকে আক্রমণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের আমেরিকা এখন চিরশক্র পুতিনের রাশিয়ার পরম বন্ধু হতে চেয়ে হাত বাড়াতে চায়। ট্রাম্প বিরোধীরা বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা শোলের হোলি ডায়লগের কায়দায় বলতে পারে, বুরা না মানো পুতিন কা এজেন্ট হে...।