বিশ্বের আবেদনে সাড়া, মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি পাচ্ছে না সৌদি কিশোর মুর্তাজা কুরেইরিস
মুর্তাজা কুরেইরিস(Photo Credit: Twitter)

সৌদি আরব, ১৭জুন:  রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট নীতি মানতে তার বেজায় আপত্তি, কৈশোরেই সে দামালপনা দেখাতে ছাড়েনি। ফলও পেয়েছে হাতেনাতে, নিয়ম ভাঙার খেলায় মেতে মৃত্যুদণ্ডকেই শাস্তি হিসেবে পেয়েছে। তবে বয়স কমের থাকায় শাস্তি স্থগিত হয়ে যায়। সম্প্রতি জানা যায়, মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেতে চলেছে সৌদি কিশোর মুর্তাজা কুরেইরিস  (Murtaja Qureiris)। এই খবরে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। আন্তর্জাতিক রাজনীতির অঙ্গনে সৌদি প্রশাসনের এহেন সিদ্ধান্তের সমালোচনা কম হয়নি। প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠে আমেরিকা-সহ প্রথম বিশ্বের অন্যান্য দেশ। শেষপর্যন্ত চাপে পড়েই মুর্তাজার শাস্তি রদ করল সৌদি সরকার (Saudi Arabia)। আরও পড়ুন-উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের ভাই সিআইএ-র গুপ্তচর, মুখে কুলুপ আমেরিকার

জানা গিয়েছে, মৃত্যুদণ্ডের সাজা ভোগ করতে হবে না সৌদির কিশোর মুর্তাজা কুরেইরিসকে। তার শাস্তি মকুব করেছে সৌদি প্রশাসন। ২০২২ সালের মধ্যে কারগার থেকে মুক্ত হতে চলেছে সে। মাত্র ১০ বছর বয়সে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরব হয় মুর্তাজা, এই অপরাধে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে, এমনিতেই সৌদি আইন খুব কঠোর, হুট বলতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়ে যায়। মু্র্তাজার অবস্থাও তেমনটাই ছিল, দেখতে দেখতে তিনটে বছর কেটে গিয়েছে ছোট্ট মুর্তাজা এখন ১৩ বছরের কিশোর। সালটা ২০১৪, অপরাধ যাই করুক না কেন, এক কিশোর প্রাণকে তো আর মৃত্যুর সাজা দেওয়া যায় না। ১৮ বয়স হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। চলতি মাসেই বিচারাধীন বন্দি মুর্তাজা ১৮ পূর্ণ করেছে। তাই ফের আলোচনার শিরোনামে চলে এসেছে সেদিনের বালক বর্তমানের কিশোর। নাহ আর রেহাই নেই, এবার তাকে মরতেই হচ্ছে। এই খবর জানাজানি হতেই শিউরে ওঠে গোটা বিশ্ব। মুর্তাজাকে বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-সহ সারা বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলি। এতদিনে মুর্তাজা কুরেইরিসের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ল, অবশেষে সার্বিক আবেদনে সাড়া দিয়ে কিশোরর মৃত্যুদণ্ড রদ করল সৌদি সরকার।

কী করেছিল এই কিশোর? ২০১৪-তে লুকিয়ে বাহরিন পালিয়ে যাচ্ছিল মুর্তাজা, সেই সময় সীমান্তে সৌদি নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে ধরা পড়ে গ্রেপ্তার বছর ১৩-র মুর্তাজা কুরেইরিস। সৌদি প্রশাসন এতটাই ক্ষিপ্ত ছিল যে মুর্তাজাকে শাস্তি দিতে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, দাদার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিত থাকা, পুলিশ থানায় মলোটভ ককটেল বোমা ছুঁড়ে মারা ও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগ দেওয়ার মতো মারাত্মক সব অভিযোগ আনে। প্রাথমিক ভাবে ১২ বছরের জেল হয় তার। কিন্তু নাবালক হওয়ায় গ্রেপ্তারির চার বছর পর থেকে সাজা পেতে শুরু করে মুর্তাজা।বিচারের নামে প্রহসন ঘটিয়ে গত বছরের অগাস্ট মাসে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরব।