গভীর রাতে ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour) আদালতের বিচারপতিদের আবাসনে দুষ্কৃতিদের আনাগোনা। সেই আতঙ্কে জেলা বিচারকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানালেন তিন বিচারপতি। ঘটনার সূত্রপাত গত ৯ সেপ্টেম্বরে। জানা যাচ্ছে, রাতের অন্ধকারে মুখে কাপড় দিয়ে দুই থেকে তিনজন দুষ্কৃতি  আবাসনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছিল। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের বাঁধা দেয়। সেই সময় দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডাও হয়। এমনকী তাঁরা আবাসনের ইলেকট্রিক লাইন কাটারও চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পরেরদিনই তিন বিচারপতি অভিযোগ জানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের হয় এফআইআর। বিচারপতিদের দাবি, এই ঘটনায় ওসি কুমারেশ দাস যুক্ত ছিলেন। বলা ভালো তিনি এই ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন।

বুধবার ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, আমরা অভিযোগ পেতেই তদন্ত শুরু করি। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখানে কয়েকজনকে মুখে কাপড় বেধে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে। বিচারপতিরা দাবী করেছেন এদের মধ্যে একজন পুলিশ আধিকারিকও রয়েছে। তবে এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না। সে পুলিশ অফিসার হোক বা যে কেউ হতে পারে। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। সন্দেহভাজনদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ওই পুলিশ আধিকারিককে শোকজ করা হয়েছে। তিনি কেন ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করেছেন তার জবাব জানতে চাওয়া হয়েছে। ৭ দিনের মধ্যে ওনাকে জানাতে হবে যে তাঁর বিরুদ্ধে কেন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। একই সঙ্গে বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে।

সেই সঙ্গে বিচারপতি আবাসনে পুলিশি নিরাপত্তা বিষয়েও এদিন নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে আবাসনের বাইরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আগে চার পাঁচজন নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল, কিন্তু এখন সেটা বাড়িয়ে ৯ জন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়ানো হবে। সেই সঙ্গে এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্টে রেজিস্টার থাকবে। কারা ঢুকছে, কারা বেরোচ্ছে সেই বিষয়ে বিস্তারিত নতিভুক্ত থাকবে। একই সঙ্গে মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থাও করা হবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত অগাস্টের একটি মামলার রায় নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। যার মধ্যে ওসি কুমারেশ দাসও ছিলেন এবং তাঁর তদন্ত নিয়ে প্রশ্নও করেন বিচারপতিদের বেঞ্চ। আশঙ্কা করা হচ্ছে সেই আক্রোশের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।