গত ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ ব্যাঙ্কে ঢুকেছিল মাইনের টাকা। ৪ মার্চ সেই টাকা তুলতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে অ্যাকাউন্টে পড়ে রয়েছে মাত্র ১৪০ টাকা। গত জানুয়ারি মাসেও একই ঘটনা ঘটেছিল হুগলির (Hooghly) শ্রীরামপুরের চাঁপসরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক শর্মিষ্ঠা গোস্বামীর সঙ্গে। ব্যাঙ্কে কিছুদিন আগেও পড়েছিল ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার কিছু বেশি। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পুরো ফাঁকা। অন্য আরেকটি অ্যাকাউন্টে ছিল ৩ লক্ষ টাকা। সামনেই মেয়ের একাদশ শ্রেণিতে উঠবেন, তারজন্য তিন লক্ষ টাকা রেখেছিলেন। সেই টাকাও গায়েব হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই মাথায় হাত চিকিৎসকের।
মেয়ের ভর্তির টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন চিকিৎসক
জানা যাচ্ছে, চিকিৎসক শর্মিষ্ঠা গোস্বামী কলকাতার বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন হুগলির বৈদ্যবাটিতে থাকেন। চাঁপসরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত তিনি। তাঁর মা ও মেয়ে কেষ্টপুরে থাকেন। মেয়ের সম্প্রতি দশম শ্রেণির পরীক্ষা দিয়ে একাদশে উঠবে। ফলে তাঁকে ভর্তি করার জন্য অ্যাকাউন্ট তিন লক্ষ টাকা রেখেছিলেন। এছাড়া বেসরকারি ব্যাঙ্কে যে স্যালারি অ্যাকাউন্ট করা রয়েছে সেখান থেকে ফ্ল্যাটের ইএমআইয়ের টাকা, জীবন বিমার টাকা, মেডিক্লেমের টাকা প্রতিমাসেই কেটে যেত।
কয়েকদিনের মধ্যেই অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব টাকা
অভিযোগ, কয়েকমাস হল তাঁর স্যালারি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কাটতে শুরু করেছে। কোনও ইউপিআই ট্রানজেকশন বা অনলাইনে কোনও সাইটে লেনদেন না করেও কেউ বা কারা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। গতমাসে এই কারণে বেসরকারি ব্যাঙ্কের স্থানীয় ব্রাঞ্চে গিয়ে কথা বলেন। তাঁরা পরামর্শ দেন ওই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে নতুন করে অ্যাকাউন্ট খোলার। সেই মতো অ্যাকাউন্ট খোলেন। তারপর এই মাসে স্যালারি ঢোকার পর মুহূর্তের মধ্যে সমস্ত টাকা গায়েব হয়ে যায়। এমনকী তাঁর আরেকটি অ্যাকাউন্ট থেকেও টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ জানিয়েছেন চিকিৎসক
বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কে গিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে তড়িঘড়ি চাঁপসরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। ব্যাঙ্কের তরফ থেকে জানানো হয়েছে তাঁর আধার কার্ডের নম্বরই নাকি হ্যাক হয়ে গিয়েছে। তাই সব টাকা কেউ হাতিয়ে নিচ্ছে। ইতিমধ্যে চিকিৎসক এনসিআরপি ও চন্দননগর সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানিয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তদন্তকারী আধিকারিকরা।