কলকাতা, ৫ ডিসেম্বর: মুকুল রায়ের (Mukul Roy) বিরুদ্ধে চার্জশিট। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন, নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের (৩৭) খুনের ঘটনায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল সিআইডি। শনিবার রানাঘাট আদালতে সিআইডি-র তরফে এই চার্জশিট পেশ করা হয়। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, তৃণমূলের যুবনেতা সত্যজিৎবাবুকে খুনের ষড়যন্ত্র, খুনিদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ এবং খুনের পর তাদের এলাকা ছাড়ার সহযোগিতা। সবেতেই মুকুল রায়ের হাত ছিল। খুনের ঘটনার পর খুনিদের সঙ্গে মুকুল রায়ের যোগাযোগ ছিল। এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটের খবর পেয়েই পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি একদা তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। আরও পড়ুন-Farmers' Protest: আজ কেন্দ্র-কৃষকদের পঞ্চম দফার বৈঠক, ৮ ডিসেম্বর ভারত বনধের ডাক
এদিন উত্তর কলকাতায় জনসংযোগের কাজে বেরিয়েছিলেন মুকুলবাবু। সেখানেই চার্জশিটের প্রসঙ্গ তুলে সাংবাদিকরা প্রশ্ন শুরু করেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দেন মুকুলবাবু। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো পুলিশমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই এই চার্জশিট হয়েছে। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলছি, বুকে হাত দিয়ে বলুন, মুকুল রায় কি এই খুন করতে পারেন? আমার বিরুদ্ধে ৪৪টি মামলা রয়েছে। আমি চিন্তিত নই। আইনের শাসনে আস্থা আছে, আইনের পথেই লড়ে নেব। চার্জশিটে নাম দিচ্ছে কে? দপ্তরের মন্ত্রী কে? তাঁকেই গিয়ে প্রশ্ন করুন।” এই প্রসঙ্গে মুকুল রায়ের আইনজীবী সুমন রায় বলেছেন, চার্জশিটের কপি এখনও হাতে না পেলেও এফআইআর-এ খুনের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে মুকুল রায়ের নাম ছিল।
বলা বাহুল্য, ২০১৯-এর ৯ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোর আগের রাতে নদিয়ার হাঁসখালিতে বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে খুন হয়ে যান নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তে নেমে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। তাদের প্রত্যেককেই গ্রেপ্তার করা হয়। পরে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায় ২ জন। গত বছর ১৪ জুন তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা করে সিআইডি। প্রথম চার্জশিটে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে মুকুল রায় ও রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের নাম ছিল না। তবে অতিরিক্ত চার্জশিটে তাদের নাম আসে। ১৯-এর ভোটের আগে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নামে সিআইডি। তবে আদালতে আগাম জামিন নিয়ে রাখেন মুকুল রায়। জামিন পেলেও সেসময় আদালতের নির্দেশে মুকুল রায় নদিয়ায় যেতে পারেননি। আজকের ঘটনার পর বিজেপির বক্তব্য। রাজ্যে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে তৃণমূল।