Henneguya salminicola (Photo: Twitter)

তেল আভিভ, ২৭ ফেব্রুয়ারি: অক্সিজেন (Oxygen) ছাড়া কেউ বাঁচতে পারে না। সে মানুষ হোক বা কোনও পশু। এটা আমরা সবাই জানি। তবে এমন এক পশু আছে যাদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন নেই। সম্প্রতি ইজরায়েলের তেল-আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Tel Aviv University) একদল গবেষক এমন এক প্রাণীর খোঁজ পেয়েছেন যাদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের কোনও প্রয়োজনই হয় না। ইস্রায়েলী গবেষকদের এই খোঁজ রীতিমতো আলোরণ সৃষ্টি করেছে গোটা বিশ্বে। গবেষকদের দাবি, এই প্রাণীটিকে দেখতে অনেকটা জেলিফিশের-এর মতো। এরা এক ধরনের পরজীবী। এর বৈজ্ঞানিক নাম হেননিগুয়া সালমিনিকোলা (Henneguya salminicola)। যাদের শরীর দশটিরও কম কোষের সমন্বয়ে গঠিত। এটা সলমন মাছের পেশীতে বাস করে। অপ্রত্যাশিত এই অনুসন্ধানে প্রাণী জগৎ সম্পর্কে বিজ্ঞানের অন্যতম একটি মূল অনুমান পরিবর্তিত হয়ে যাবে।

এই আবিষ্কারের ফলে জানা গেছে, এই প্রাণী ‘মাল্টিসেলুলার’ জীব যার শরীরে মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোম নেই। এই কারণেই এদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের একেবারেই প্রয়োজন হয় না। মানুষসহ বিশ্বের প্রতিটি প্রাণীর শরীরে প্রচুর পরিমাণে মাইটোকন্ড্রিয়া পাওয়া যায় যা শ্বাস প্রশ্বাসের প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে ‘হেননিগুয়া সালমিনিকোলা’ নামের পরজীবীই হল প্রথম এমন এক জীব যাদের শরীরে মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোমের অস্তিত্ব নেই। আরও পড়ুন: Apple Watch Saves A Life Of Teen Athlete: কিশোরের প্রাণ বাঁচাল অ্যাপল ঘড়ি, কেন জানেন?

এই গবেষণা দলের প্রধান প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডরোথি হুচুন বলেন, "নতুন এই জীবের সন্ধান মেলার ফলে প্রাণী বিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত খুলে গেল। এই পরজীবী মানুষের এবং অন্য জীবের পক্ষে মোটেও ক্ষতিকর নয়। তবে গবেষক দল এখনও এটা জেনে উঠতে পারেননি কীভাবে এই প্রাণীর বিকাশ হয়েছে বা এর জন্মই বা হল কীভাবে। এই পরজীবীটি সলমন মাছের শরীরে পরজীবী হিসাবে পাওয়া গেছে। সলমন মাছ থেকেই খাদ্য অর্জন করে বেঁচে থাকে এই পরজীবী। তবে মাছের কোনও ক্ষতিও করে না এরা। যতক্ষণ মাছ বেঁচে থাকে ততক্ষণ বেঁচে থাকে এই পরজীবী।

ইয়াহলোমি জানান, এটিকে ফ্লুরোসেন্ট মাইক্রোস্কোপ দিয়ে এটি পরীক্ষা করে দেখেছেন তাঁরা। এদের মধ্যে সবুজ নিউক্লিয়াস দেখা গেলেও মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ দেখা যায়নি। ২০১০ সালেও একই রকম ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ইতালির পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির গবেষক রবার্তো ড্যানভোরো এই ধরনেরই পরজীবীর সন্ধান দেন। ওই পরজীবীদের শরীরেও মাইটোকন্ড্রিয়া পরিষ্কারভাবে দেখা যায়নি। তবে গবেষণায় জানা যায়, ওই পরজীবীরা গভীর সমুদ্রে বছরের পর বছর বাস করতে পারে। এদের জীবন শক্তির উত্স হাইড্রোজেন সালফাইড। তবে সদ্য পাওয়া ‘হেননিগুয়া সালমিনিকোলা’ (Henneguya salminicola) নামের এই পরজীবীর বাঁচার জন্য