BCCI New Guidelines: ভারতের ক্রিকেটের ভালোর জন্য ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) একটি ১০ দফা কঠোর গাইডলাইন বানিয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়ায় সেই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। যেটা পড়ে বোঝা যাচ্ছে যে বিসিসিআই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে খেলোয়াড়রা সফরের সময় শেফ, হেয়ারড্রেসার, স্টাইলিস্ট বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা রক্ষীদের মতো ব্যক্তিগত কর্মীদের সাথে নিয়ে ট্র্যাভেল করতে পারবেন না। এই পদক্ষেপ সর্বস্তরে ক্রিকেটের বিকাশের উপর জোর দেওয়ার সঙ্গে খেলোয়াড়দের আরও পেশাদার এবং টিম প্লেয়ার কালচারের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য নেওয়া। এছাড়া দলে ডিসিপ্লিন আনার বিষয়টি নিশ্চিত করতেই খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিস সেশন বা ম্যাচের যাতায়াতের জন্য আর প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে না। শুধু তাই নয়, সফরে খেলোয়াড়দের সঙ্গে থাকা পরিবারের সদস্যদেরও কঠোর বিধিনিষেধের মুখোমুখি হতে হবে। Kevin Pietersen: ভারতের নতুন ব্যাটিং কোচ হতে চান কেভিন পিটারসেন, উৎসাহ দেখিয়ে করলেন পোস্ট
ইন্ডিয়া টুডের রিপোর্ট বলছে, অস্ট্রেলিয়ায় বর্ডার গাভাস্কর ট্রফিতে ভারতীয় দলের ১-৩ ব্যবধানে হারের পর বিসিসিআই একটি রিভিউ মিটিং ডাকে। যেখানে আলোচনার মূল বিষয়গুলির মধ্যে ছিল মুম্বই টেস্টের জন্য র্যাঙ্ক টার্নার প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত, জসপ্রীত বুমরাহকে বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত এবং গৌতম গম্ভীরের কোচিং পদ্ধতি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা, নির্বাচকদের চেয়ারম্যান অজিত আগরকর, হেড কোচ গম্ভীর এবং সভাপতি রজার বিনি। এখানেই আলোচনা হয় খেলোয়াড়দের নয়া গাইডলাইন নিয়ে।
নিজেও পড়ুন ভারতীয় ক্রিকেট দলের নয়া গাইডলাইন
📢 THE BCCI RELEASES 10 NEW GUIDELINES FOR INDIAN PLAYERS. pic.twitter.com/5SXoPOrjz0
— Mufaddal Vohra (@mufaddal_vohra) January 16, 2025
কি রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের নয়া গাইডলাইনে?
ঘরোয়া ম্যাচে অংশগ্রহণ- বিসিসিআইয়ের গাইডলাইন অনুযায়ী, জাতীয় দল এবং কেন্দ্রীয় চুক্তির জন্য খেলোয়াড়দের নির্বাচনের যোগ্য থাকার জন্য ঘরোয়া ম্যাচে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। এই নীতি নিশ্চিত করে যে খেলোয়াড়রা ঘরোয়া ক্রিকেট ইকোসিস্টেমের সাথে জুড়ে থাকবেন। এতে তাঁদের ম্যাচ ফিটনেসও বজায় থাকবে এবং ঘরোয়া কাঠামোও শক্তিশালী হবে। একমাত্র বাছাই কমিটির চেয়ারম্যানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক নোটিশে অনুমোদন পেলে তবেই মিলবে ব্যতিক্রম।
পরিবারের থেকে আলাদাভাবে ট্র্যাভেল- সব খেলোয়াড়ই দলের সঙ্গে ম্যাচ ও প্র্যাকটিস সেশনে যাতায়াত করবেন। পরিবারের সাথে আলাদাভাবে যাওয়া যাবে না। ব্যতিক্রম, যদি থাকে তবে অবশ্যই প্রধান কোচ এবং নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানের থাকে আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে।
ব্যাগেজ লিমিট- খেলোয়াড়দের দলের সাথে নির্দিষ্ট ব্যাগেজ লিমিট মেনে চলতে হবে। যে কোনও অতিরিক্ত লাগেজের খরচ খেলোয়াড়কে দিতে হবে। এই নীতিটি লজিস্টিককে স্ট্রিমলাইন করতে এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়াতে সহায়তা করবে।
ব্যাগেজ পলিসি:
লম্বা ট্যুর (৩০ দিনের বেশি): খেলোয়াড়: ৫টি ব্যাগ (৩ স্যুটকেস + ২ কিট ব্যাগ) বা ১৫০ কেজি পর্যন্ত। সাপোর্ট স্টাফ: ৩টি ব্যাগ ( ২টি বড় + ১টি ছোট স্যুটকেস) বা ৮০ কেজি পর্যন্ত।
কম সময়ের ট্যুর (৩০ দিনের কম): খেলোয়াড়: ৪টি ব্যাগ (২ স্যুটকেস + ২ কিট ব্যাগ) বা ১২০ কেজি পর্যন্ত। সাপোর্ট স্টাফ: ২টি ব্যাগ (২ স্যুটকেস) বা ৬০ কেজি পর্যন্ত।
হোম সিরিজ: খেলোয়াড়: ৪টি ব্যাগ (২ স্যুটকেস + ২ কিট ব্যাগ) বা ১২০ কেজি পর্যন্ত। সাপোর্ট স্টাফ: ২টি ব্যাগ (২ স্যুটকেস) বা ৬০ কেজি পর্যন্ত।
খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত স্টাফের উপর বিধিনিষেধ- ব্যক্তিগত স্টাফরা (যেমন, ব্যক্তিগত ম্যানেজার, শেফ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং সুরক্ষা কর্মী) বিসিসিআইয়ের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত ট্যুর বা সিরিজে যেতে পারবে না।
সেন্টার অব এক্সিলেন্স এ ব্যাগ পাঠানো- বেঙ্গালুরুর সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে ক্রিকেট সরঞ্জাম এবং ব্যক্তিগত আইটেম পাঠানোর বিষয়ে খেলোয়াড়দের অবশ্যই টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলতে হবে। আলাদা আয়োজনের কারণে বাড়তি কোনো খরচ হলে সেটির দায়িত্ব হবে খেলোয়াড়ের।
প্র্যাকটিস সেশনে উপস্থিতি- সমস্ত খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিস সেশনে অংশ নিতে হবে এবং ভেন্যুতে একসাথে ট্র্যাভেল করতে হবে।
সিরিজ/ট্যুর চলাকালীন ব্যক্তিগত শুটিংয়ের উপর বিধিনিষেধ- সফর চলাকালীন খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত শুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হবে না। মনে করা হচ্ছে এতে খেলোয়াড়দের খেলার ফোকাস নষ্ট হয়।
ফ্যামিলি ট্রাভেল পলিসি- বিদেশ সফরে ৪৫ দিনের বেশি হলে খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁদের পরিবার প্রতি সিরিজে (ফরম্যাট ভিত্তিক) দুই সপ্তাহের জন্য যোগ দিতে পারবেন। বিসিসিআই সেই সময়ের থাকা খাওয়ার খরচ তুলবে। বাকি সব খরচ খেলোয়াড়কে তুলতে হবে। কোচ, ক্যাপ্টেন এবং জিএম অপারেশনের দেওয়া তারিখেই পরিবার আসতে পারবে দেখা করতে। এই নিয়মের ব্যতিক্রম হলে কোচ, ক্যাপ্টেন এবং জিএম অপারেশনের থেকে আগে অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া নির্ধারিত ভিজিটর পিরিয়ডের বাইরে বাড়তি খরচ বিসিসিআই দেবে না।
বিসিসিআইয়ের অফিসিয়াল এনগেজমেন্টে অংশগ্রহণ- বিসিসিআইয়ের অফিসিয়াল শুটিং, ক্যাম্পেন এবং অনুষ্ঠানের জন্য খেলোয়াড়দের উপলব্ধ থাকতে হবে।
ট্যুর সমাপ্তি- ম্যাচ সিরিজ বা সফরের শেষ না হওয়া পর্যন্ত খেলোয়াড়দের অবশ্যই দলের সাথে থাকতে হবে, এমনকি যদি ম্যাচগুলি পরিকল্পনার আগে শেষ হয় তখনও।
শাস্তিঃ বিসিসিআই জানিয়েছে সব খেলোয়াড়কে এই গাইডলাইন কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। যে কোনও ব্যতিক্রমের জন্য নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান এবং প্রধান কোচের কাছে আগে অনুমতি নিতে হবে। অমান্য করলে বিসিসিআই উপযুক্ত বলে মনে করলে শাস্তি দিতে পারে। এই শাস্তির মধ্যে রয়েছে সেই খেলোয়াড়কে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ সহ বিসিসিআইয়ের সমস্ত টুর্নামেন্টে অংশ নিতে নিষেধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া বিসিসিআই তাঁর রিটেইনার অ্যামাউন্ট বাঁ ম্যাচ ফি থেকে টাকা কেটে জরিমানা করতে পারে।