যক্ষ্মা একটি গুরুতর শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, যার কারণে অনেক ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট এই সংক্রমণ, যা সংক্ষেপে টিবি নামে পরিচিত। এই সংক্রমণ ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এই রোগ প্রতিরোধ করার জন্য সরকার নিরন্তর চেষ্টা করে চলেছে, তা সত্ত্বেও দেশে যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা হয়ে উঠেছে উদ্বেগের কারণ।
জানা গেছে, সম্প্রতি আসামের এক কলেজে টিবিতে আক্রান্ত পড়ুয়া পাওয়া গেছে ৩০ জন। স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল সম্প্রতি ২০০ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা করে, তাদের মধ্যে ৩০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাওয়া যায় যক্ষ্মার উপসর্গ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই মারাত্মক রোগের হদিশ পাওয়া যেতেই ক্যাম্পাসে তৈরি হয়েছে আতঙ্কের পরিবেশ। ছাত্রছাত্রীরা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ায় মনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে তরুণরাও কি শিকার হতে পারে এই সংক্রমণের?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, টিবি সংক্রমণ হতে পারে যেকোনও বয়সের মানুষের। এমনকি দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে টিবি সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি দেখা গিয়েছে। টিবি হলে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুরুতর হতে পারে। তাই সকল বয়সের মানুষকে টিবি সম্বন্ধে সাবধান হওয়া জরুরি। বিশ্বজুড়ে যক্ষ্মা তরুণদের মধ্যে একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোট টিবি আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮৮২। এই রিপোর্টে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে টিবি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩১৭। জানা গেছে এই বছর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৪% শিশু টিবি আক্রান্ত পাওয়া গিয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন কিছু কারণ রয়েছে যার জেরে এই সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। টিবি আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে বসবাস বা ঘনিষ্ঠদের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এছাড়া যদি এমন কোনও এলাকায় বসবাস করা হয় যেখানে ইতিমধ্যেই যক্ষ্মা রোগের সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে, তাহলেও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়া যাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয় তাদের যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যেসব দেশে যক্ষ্মা সমস্যা সাধারণ, সেই দেশের শিশুদের অবশ্যই Bacille Calmette-Guérin (BCG) টিকা নেওয়া উচিত, এর ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। কম বায়ুচলাচল করা জায়গায় টিবি বা অন্য ধরণের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তাই ঘরের মধ্যে ভালো বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মুখে মাস্ক ব্যবহার করলে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা পাওয়া যেতে পারে।