প্রতীকী ছবি(Photo Credit: Twitter)

কাজাখস্তান, ১৭ জুলাই: ঘুম, এই বিলাসহীন বিনোদনে আগ্রহ নেই এমন মানব সন্তানের সংখ্যা এ পৃথিবীতে নগন্য বৈকি। সুযোগ পেলেই মনে হয় ঘুমের দেশে পাড়ি দিই। সে ছাত্রজীবন হোক বা কর্মী জীবন, ঘুমের বিকল্প কিন্তু কিছুই নেই।  তাইবলে সারা দিন যদি ঘুমিয়ে থাকেন তাহলে ভাগ্যও তো ঘুমিয়ে পড়বে। তাই এই নির্ভেজাল বিনোদনের জন্যও ছুটির দিনটির অপেক্ষা করতেই হয়। কিন্তু এমন একটা খবর শোনাবো যা অবাক হওয়ার জন্য যথেষ্ট। একটা গ্রাম যখন তখন ঘুমিয়ে পড়ছে। কেউ হয়তো দোকানে খরিদারি করছেন, সেখানেই ঘুমিয়ে পড়লেন।  আরও  পড়ুন-এমন কী কলম, কালি ফুরোলে মাটিতে পুঁতে চারাও পাবেন?

অথচ কেউই ক্লান্ত নয়। কারও ঘুম ভাঙছে ছয়-সাত ঘণ্টা পরে, কখনও কেটে যাচ্ছে তিন-চার দিনও! এক দিন নয়, বছরের পর বছর ধরে ঘটছে এই ঘটনা।  কাজাখস্তানের এসিল জেলার একটি ছোট গ্রাম ‘কালাচি’। গ্রামবাসীদের এই ঘুমিয়ে পড়াই গোটা বিশ্বকে চিনিয়েছে এই গ্রামকে। শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখিরাও এই ঘুমের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। ঘুম ভাঙলেও বিপত্তির শেষ নেই। থেকে যায় অনেক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া।ঘুমিয়ে পড়ার এই ঘটনা প্রথম নজরে আসে ২০১৩ সালে। গ্রামের সবার চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে এই ঘুম। বহুক্ষণ পর ঘুম ভাঙলে থেকে যায় সপ্তাহ জুড়ে মাথা ব্যথা, বমি ভাব। কারও কারও রক্তচাপ বেড়ে যায় মাত্রাহীন ভাবে। হ্যালুসিনেশনের পাশাপাশি অনেকের স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।ঘুম থেকে ওঠার পর বাচ্চারা যেমন তার মায়ের মুখে হাতির শুঁড় গজাতে দেখেছে! পুরুষদেরও ওই সময়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরির ইচ্ছা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। চাহিদা পূরণ না হলেই উত্তেজনা চরমে। এই হ্যালুসিনেশন এবং যৌন মিলনের চাহিদা ৭ দিন থেকে ১ মাস অবধিও থাকে।প্রথম এই রোগের শিকার হন লিউভক বেলকোভা নামক এক মহিলা। ২০১০ সালে বাজারে কাজ করার সময়ই হঠাৎই তীব্র ঘুম পায় তাঁর। ৪ দিন বাদে তিনি ঘুম থেকে ওঠেন।

এই ঘুমের পিছনে রয়েছে অদূরের ক্রাসনোগোরস্কি ইউরেনিয়াম খনির ২০১৫ সালে এর কারণ জানা যায়। বিজ্ঞানীরা দেখেন রেডিয়েশন নয়, এই ঘুমের কারণ বাতাসে উপস্থিত কার্বন মনোক্সাইড এবং হাইড্রো কার্বনের অতিরিক্ত পরিমাণ। কার্বন মনোক্সাইড অক্সিজেনের তুলনায় ২০০ গুণ দ্রুত রক্তে মেশে। ফলে শরীরে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছতে দেয় না। অক্সিজেনের অভাবেই মস্তিষ্ক সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না এবং মানুষ ঘুমিয়ে পড়েন বহু ঘণ্টার জন্য।