সপ্তাহান্তের ছুটিতে ফুরফুরে থাকতে ঘুরে দেখুন বাংলার অলিগলি, কতই না সম্পদ ছড়িয়ে আছে সেখানে। প্রাণখোলা সমুদ্র, গহীন জঙ্গল, ঐতিহ্য ও ইতিহাসের মেলবন্ধন এই বাংলা। আজ তৃতীয় পর্বে রইল হেনরি আইল্যান্ডের ইতিকথা।
হেনরি আইল্যান্ড(Henry Island)
কলকাতার(Kolkata) অদূরে দুদিনের নির্ভেজাল ছুটি কাটাতে চাইলে আপনার ঠিকানা হোক হেনরি আইল্যান্ড। বকখালির কল্যাণে জনপ্রিয় হলেও সমুদ্রে নামার নিষেধাজ্ঞা থাকায় হেনরি আইল্যান্ড এখনও নির্জন। প্রকৃতির কোলে এই নির্জনতা উপভোগ করতে চাইলে মৎস্য দপ্তরের দুটি রিসর্ট রয়েছে। একটি ম্যানগ্রোভ ও অন্যটি সুন্দরী। হোটেলের ছাদ ও ওয়াচ টাওয়ারে বসে বিস্তীর্ণ বনভূমিকে চাক্ষুস করুন। ছাদে বসেই সমুদ্র দেখতে পারেন। সুন্দরী রিসর্টের ৫০০ মিটারের মধ্যেই সমুদ্র তাই এটিই বুক করা সবথেকে সুবিধাজনক। সল্টলেকের বিকাশভবনের মৎস্য দপ্তরের অফিস থেকেই রিসর্ট বুক করতে হবে। আর ধর্মতলা থেকে বকখালির বাস ছাড়ে চারঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে। চাইলে শিয়ালদা থেকে নামখানা লোকল ধরে সেখানে পৌঁছে টোটোতেও যেতে পারেন। ম্যানগ্রোভের জঙ্গলে ঘেরা, মাছচাষের কয়েকটা ভেড়ি, গুটিকতক কটেজ এবং একটা বাড়ি, পিছনে ৫০০ মিটার দূরেই নির্জন সমুদ্রতট। এই হল হেনরি আইল্যান্ড। হোটেলের ছাদের ওয়াচ টাওয়ার থেকেই সমুদ্র এবং সুদূর বিস্তৃত অরণ্য দেখা যায়। এক কথায় অসাধারণ। নির্জন সমুদ্রের ধারে এবং ওয়াচ টাওয়ারে বসেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেওয়া যায়। পিকচার পোস্টকার্ডের মতো অসাধারণ সব ফ্রেম চোখের সামনে সাজানো রয়েছে। ছবি তুলতে যারা ভালোবাস, তাদের কাছে দৃশ্যগুলি লোভনীয়। ভেড়ির টাটকা মাছ খেয়ে এবং বিশ্রাম নিয়ে দু’টো দিন কাটিয়ে দিন মন্দ লাগবে না। বুকে বাড়তি অক্সিজেন পাবেন। এই রিসর্টের কিচেনে এখনও শিলনোড়ার মশলা বাটা চালু আছে, তাই রান্নার স্বাদ অতুলনীয়।
হাতিবাড়ি(Hatibari)
পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়ি একটা দারুণ জায়গা, এর তিনদিকে পশ্চিমবঙ্গ-ওড়িশা-ঝাড়খণ্ড(West Bengal, Orissa, Jharkhand), এই তিন রাজ্যের সীমানায় সুবর্ণরেখা নদীর ধারে হাতিবাড়ি যেন প্রকৃতির সাজানো বাসর।জেলেনৌকায় চেপে বিহার করা যেতে পারে সুবর্ণরেখার বুকে। হাতিবাড়ির রূপ এতোটাই সুন্দর যেন মনে হবে প্রকৃতি তার সবটুকু সৌন্দর্য অকৃপণ ভাবে ঢেলে দিয়েছে এখানে। এরই মাঝে শাল, পিয়াল, সেগুন, আকাশমণি আর ইউক্যালিপটাসের কোনায় কোনায় চেনা অচেনা পাখপাখালির কলকাকলি পরিবেশকে আরও মনোরম করে তুলেছে এই হাতিবাড়িতে। হাতের মুঠোয় এই পর্যটন কেন্দ্র। কয়েকটা দিন নিরিবিলিতে কাটানোর এক আদর্শ পরিবেশ।সাধারণত খড়গপুর থেকে ঝাড়গ্রাম হয়ে হাতিবাড়ি পৌঁছানো যায়। তবে এরাজ্যে হলেও হাতিবাড়ি যেতে প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডকে ছুঁতেই হবে।থাকতে চাইলে বুক করুন হাতিবাড়ির ফরেস্ট রেস্ট হাউস। ঘনজঙ্গল লাগোয়া তাঁবুতে নিশিযাপন রোমাঞ্চকর বৈকি।