শরীর সঠিকভাবে কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অতিরিক্ত জল পান করা স্বাস্থ্যের জন্য হতে পারে খুবই ক্ষতিকর। টেক্সাসের ৭৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তি অত্যধিক জল পান করার পর হার্ট অ্যাটাকের মতো উপসর্গ অনুভব করেছিলেন। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, রাতে ক্লান্তি ও বমি বমি ভাব শুরু হয় তার, যা শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথায় পরিণত হয়। ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কারণ তিনি ভেবেছিলেন যে তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তবে পরে জানা যায় জলে বিষক্রিয়ায় ভুগছিলেন তিনি।
জলে বিষক্রিয়া হল জল পান করার পর নেশার অনুভূতি বা হাইপারহাইড্রেশনের অনুভূতি, এমন একটি অবস্থা, যা রক্তে ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রার তুলনায় শরীরে খুব বেশি জল থাকলে ঘটে। ইলেক্ট্রোলাইট হল সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ, যা শরীরের তরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং পেশীর কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। জল পান করার সময় যখন তা শরীরে প্রবেশ করে তখন রক্ত চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। সেই সময় অতিরিক্ত জল ফিল্টার করে প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয় কিডনি। অতিরিক্ত পরিমাণে জল পান করলে এই ভারসাম্যকে বিপর্যস্ত হতে পারে এবং রক্তে ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা কমাতে পারে। এটি শরীরে তরলের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে এবং জলের বিষক্রিয়া হতে পারে।
জলে বিষক্রিয়ার লক্ষণগুলি হল মাথাব্যথা, ক্লান্তি, বিভ্রান্তি, বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া, পেশী দুর্বলতা, হাতে ও পায়ে বাধা, খিঁচুনি। ক্রীড়াবিদরা এবং যারা ভারী ওয়ার্কআউট করেন তাদের জলে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে, কারণ এই ধরনের ব্যক্তিরা নিজেদের হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর জল পান করেন। এছাড়া কিডনি রোগ বা হার্ট ফেইলিওরের মতো কিছু গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া শিশুদের মধ্যেও জলে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে, কারণ তাদের শরীর ছোট হওয়ায় অতিরিক্ত তরল বিপজ্জনক। তাই ছোটদের জল পান করানোর সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।