ভগবান শিবকে যোগের জনক বলা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে স্বয়ং শিব দ্বারা শুরু হয়েছিল যোগব্যায়াম এবং ধ্যানের ঐতিহ্য। ধ্যান ও আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে আত্মা ও ঈশ্বরের মিলনের পথ দেখিয়েছিলেন শিব। তাই মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে ভগবান শিবের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু যোগাসন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। এই যোগাসনগুলি নিয়মিত করলে শরীর শক্তিশালী হওয়ার সঙ্গে মানসিক প্রশান্তিও পাওয়া যায়। এই যোগাসনগুলি করা খুবই সহজ।

  • নটরাজসন

নটরাজসনকে ভগবান শিবের তাণ্ডব নৃত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই আসন শরীরের ভারসাম্য উন্নত করে এবং ঘনত্ব বাড়ায়। নিয়মিত এটি করলে পেশী নমনীয় হয় এবং শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি করার জন্য, প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ডান পা পিছনে তুলতে হয় এবং ডান হাত দিয়ে গোড়ালি ধরতে হয়। বাম হাত সোজা সামনের দিকে প্রসারিত করতে হয়, যেন কোনও লক্ষ্যবস্তুর দিকে নির্দেশ করা হয়েছে। শরীরের ওজন বাম পায়ের উপর রেখে ধীরে ধীরে বুক সামনের দিকে বাঁকিয়ে কিছুক্ষণ এভাবে থাকার পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। এরপর অন্য পা দিয়ে একই পদ্ধতি পুনরাবৃত্তি করতে হবে।

  •  ভুজঙ্গাসন

ভুজঙ্গাসন দেহকে একটি সাপের আকৃতি দেয় যা ভগবান শিবের গলায় বসে থাকে। নিয়মিত ভুজঙ্গাসন করলে মেরুদণ্ড শক্তিশালী হয়, ফুসফুস সুস্থ থাকে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ভুজঙ্গাসন করার জন্য, প্রথমে মাটিতে পেটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে উভয় পা সোজা রাখতে হয়। এরপর হাতের তালু কাঁধের কাছে মাটিতে রেখে কনুই শরীরের কাছে রাখতে হয়। গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে হাতের উপর চাপ প্রয়োগ করে বুক এবং মাথা উপরে তুলতে হবে। এই সময় পেট মাটিতে রেখে ঘাড় কিছুটা পিছনের দিকে বাঁকাতে হয়। এই মুদ্রায় ৩০ সেকেন্ড থাকার সময় ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে এবং ছাড়তে হয়।

  • হনুমানাসন

হনুমান জি হলেন ভগবান শিবের অবতার। হনুমানাসনের ফলে কোমর এবং নিতম্বের পেশী শক্তিশালী হয়। এই আসনটি পিঠের ব্যথাও কমায়। এটি করার জন্য প্রথমে মাটিতে বসে গভীর শ্বাস নিয়ে ডান পা সামনের দিকে সরাতে হয়। এরপর ধীরে ধীরে বাম পা পিছনের দিকে স্লাইড করতে হয় যতক্ষণ না উভয় পায়ের মধ্যে দূরত্ব থাকে। এবার প্রণাম মুদ্রায় হাত বুকের কাছে রেখে অথবা উপরে তুলে‌ গভীর শ্বাস নিয়ে কয়েক সেকেন্ডের জন্য এই ভঙ্গিতে থাকতে হয়। এরপর ধীরে ধীরে শ্বাস ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হয়।