Sant Ravidas Jayanti 2024: গুরু রবিদাস জয়ন্তী কবে? জেনে নিন তাঁর জীবনের কিছু অজানা তথ্য...

ভক্তি আন্দোলনের শ্রদ্ধেয় সাধক গুরু রবিদাস জন্মগ্রহণ করেন মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে, বারাণসীর গোবর্ধনপুর গ্রামে। তিনি রবিবার দিন জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে তাঁর নাম রাখা হয় রবিদাস। তবে তাঁর অনুসারীদের মধ্যে তিনি বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে তাঁকে বলা হয় রোহিদাস, বাংলায় তাঁকে বলা হয় রুই দাস, আবার পাণ্ডুলিপিতে তিনি রামদাস, রাইদাস, রেমদাস এবং রৌদাস নামেও পরিচিত। ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, শনিবার পালিত হবে তাঁর ৬৪৮ তম জন্মবার্ষিকী। এই উপলক্ষ্যে চলুন জেনে নেওয়া যাক গুরু রবিদাস সম্পর্কিত কিছু অজানা তথ্য।

খুব সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শৈশব জীবন কাটিয়েছেন রবিদাস। তিনি তাঁর পরিবারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতেন। কিন্তু তাঁর মায়ের ধর্মীয় প্রবণতা তাঁর ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল। রবিদাস প্রথম ধাপে ধর্ম শিক্ষা অর্জন করেন তাঁর মায়ের কাছ থেকে। নিম্নবর্ণের হওয়ায় তিনি তার পরিবার, সমাজ ও নিম্নবর্ণের মানুষকে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য অনুপ্রাণিত করার সঙ্গে নিজেও সংগ্রাম করতেন। এবার জেনে নেব তাঁর জীবনের দুটি সুন্দর গল্প।

  • একদিন রাইদাস তার কুঁড়েঘরে বসে ছিলেন। তখন এক ব্রাহ্মণ এসে তাঁকে বলেন তিনি গঙ্গা স্নান করতে যাচ্ছেন, তাই তাঁর আগে রাইদাসের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। রাইদাস গঙ্গাতে দেওয়ার জন্য একটি মুদ্রা দিলেন। ব্রাহ্মণ সেই মুদ্রা গঙ্গায় দিলে মা গঙ্গা তাঁকে একটি সোনার চুড়ি দেন। নগরের রাজাকে খুশি করার জন্য ব্রাহ্মণ সেই চুড়ি রাজাকে দিয়ে দেন। রাজা তাঁর স্ত্রীকে সেই চুড়ি দিয়ে ব্রাহ্মণকে দেন স্বর্ণমুদ্রা। রানীর সেই চুড়ি পছন্দ হওয়ায় রাজাকে সেই রকম আরেকটি চুড়ি দিতে বলেন। রাজা ব্রাহ্মণকে বলেন একই রকম আরেকটি চুড়ি না নিয়ে এলে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে। ব্রাহ্মণ চিন্তিত হয়ে রাইদাসের কাছে গিয়ে তাঁকে সব কথা বলেন। রাইদাস তখন একটি পাত্রে গঙ্গাজল ঢেলে গঙ্গাজীকে আহ্বান করেন। মা গঙ্গাকে সব কিছু বলার পর আরেকটি চুড়ি চাইলে, মা গঙ্গা আরেকটি চুড়ি দিয়ে দেন তাঁকে। রাইদাস সেই চুড়ি ব্রাহ্মণকে দিয়ে বলেন, রাজাকে দিয়ে আসতে।
  • একবার রাইদাসের কয়েকজন বন্ধু তাঁর কাছে এসে বলেন, তারা গঙ্গায় স্নান করতে যাচ্ছেন, সম্ভব হলে যেন তিনিও তাঁদের সঙ্গে চলেন। রাইদাস বলেন, তিনি অবশ্যই গঙ্গায় স্নান করতে যেতে ইচ্ছুক। কিন্তু তিনি কাউকে সেদিন জুতা বানিয়ে দেওয়ার কথা দিয়ে ছিলেন। তাই তিনি বলেন, এমন অবস্থায় তিনি যদি গঙ্গায় স্নান করতে যান, তাহলে তাঁর মন কাজের দিকেই পড়ে থাকবে। আর অন্য দিকে মন থাকলে গঙ্গা স্নানের পুণ্য পাওয়া যায় না। এরপর তিনি বলেন, মন যদি পরিষ্কার থাকে তবে পুকুরের জলে স্নান করেও গঙ্গা স্নানের পুণ্য লাভ করা সম্ভব। তখন থেকেই এই প্রবাদ প্রচলিত, 'মন চাঙ্গা তো কাঠোতি মে গঙ্গা' অর্থাৎ মন পরিষ্কার থাকলে সব জলই গঙ্গা।