হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, প্রতি বছর মাঘ শুক্লপক্ষের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় ললিতা জয়ন্তী। শাস্ত্র অনুসারে মা ললিতাকে দশ মহাবিদ্যার মধ্যে তৃতীয় মহাবিদ্যা বলে মনে করা হয়। যারা ললিতা জয়ন্তীতে পূর্ণ ভক্তি ও নিষ্ঠা সহকারে উপবাস করে পুজো করে, তারা দেবী ললিতার আশীর্বাদে সৌভাগ্য ও সিদ্ধি লাভ করে। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে, ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, শনিবার পালিত হবে ললিতা জয়ন্তী। ২০২৪ সালের মাঘী পূর্ণিমা ২৩ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার দুপুর ০৩:৩৩ মিনিটে শুরু হয়ে শেষ হবে ২৪ ফেব্রুয়ারি, শনিবার, সন্ধ্যা ০৫:৫৯ মিনিটে।

মান্যতা আছে, ললিতা দেবীর আরাধনা করলে সকল প্রকার সিদ্ধিলাভ হয়। মা ললিতা- রাজেশ্বরী, শোদশী, ত্রিপুরা সুন্দরী নামেও পরিচিত। ললিতা জয়ন্তীর দিনে উপবাস ও দেবী ললিতার আরাধনা করলে ব্যক্তি মোক্ষ লাভ করে এবং জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্ত হয়। তাই ললিতা জয়ন্তীতে দেবী ললিতার প্রতি সত্যিকারের বিশ্বাস ও ভক্তির সঙ্গে পুজো করা হয়।

দেবীপুরাণ অনুসারে, একবার নৈমিষারণ্যে যজ্ঞ চলছিল। রাজা দক্ষ দেখলেন, ভগবান শিব ছাড়া সকল দেবতা তাঁর সম্মানে উঠে দাঁড়িয়েছেন। সেই সময় দক্ষ রেগে ভগবান শিবকে তাঁর মহাযজ্ঞে আমন্ত্রণ জানাননি। তবে দেবী সতী ভগবান শিবের অনুমতি না নিয়েই সেই যজ্ঞে পৌঁছে যান, কিন্তু দক্ষ ভগবান শিবকে অপমান করলে সতী যজ্ঞকুণ্ডে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ভগবান শিব এই কথা জানতে পেরে মহাযজ্ঞ ধ্বংস করে সতীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে ব্রহ্মাণ্ডে যাত্রা শুরু করলে ব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ভগবান বিষ্ণু তাঁর সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর মৃতদেহকে টুকরো টুকরো করে সতীর বন্ধন থেকে মুক্ত করেন মহাদেবকে। এইভাবে মৃতদেহের টুকরো যেখানেই পড়ে সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হয় শক্তিপীঠ। ভগবান শিবকে হৃদয়ে ধারণ করার কারণে সতী নৈমিশে লিঙ্গধারিণী নামে বিখ্যাত হন, তিনি ললিতা দেবী নামেও পরিচিত।