প্রতি বছর জ্যেষ্ঠ মাসের প্রতি মঙ্গলবার পালন করা হয় বড় মঙ্গল উৎসব, এই দিনটিকে বলা হয় ‘বুদ্ধ মঙ্গল’ও। এই দিনে পুজো করা হয় রামভক্ত হনুমানের পুরনো রূপের। আজ ২০২৪ সালের ৪ জুন, জ্যেষ্ঠ মাসের দ্বিতীয় বড় মঙ্গলবার। সনাতন ধর্ম অনুসারে, এই দিনে নিয়ম মেনে ভগবান হনুমানের পুজো করলে জীবনে সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়। হনুমান জির কৃপায় জীবনের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, এই পুজো বা উপবাসের নিয়মে সামান্য ভুল হলে দ্রুত ক্রুদ্ধ হয়ে যান হনুমানজি।

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, রামায়ণ ও মহাভারতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বুদ্ধ মঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী উৎসব। মহাভারতের যুদ্ধে জয়লাভের পর ক্ষমতার অহংকারে যাওয়ার সময় সেই পথের মাঝে একটি বৃদ্ধ বানর তার লেজ বিছিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তখন ভীম বলেন, 'হে বৃদ্ধ বানর, আপনার লেজ সরান, আমাদের যেতে হবে।' তার উত্তরে বানর বলেন, 'বাছা আমি বুড়ো হয়ে গেছি, তুমি আমার লেজ তুলে চলে যাও।' এরপর ভীম ওই বানরের লেজ সরানোর অনেক চেষ্টা করলেও তা সরাতে পারেন না। ভীম তখন বুঝতে পারেন তিনি সাধারণ বানর নন। ভীম হাত জোড় করে বলেন, 'হে বানর রাজা, আপনি সাধারণ বানর নন, আপনি নিজের পরিচয় দিন।' তারপর বানর তার বিশাল রূপ দেখিয়ে বলেন, তিনি শ্রীরামের ভক্ত হনুমান। ভীম ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, 'প্রভু, আপনি আমার অহংকার দূর করে আমাকে মুক্তি দিয়েছেন।'

এই তিথিতে কিছু কাজ এড়িয়ে চলা উচিত। জ্যোতিষীদের মতে, বড় মঙ্গল তিথিতে উত্তর দিকে ভ্রমণ করা উচিত নয়। বড় মঙ্গল তিথিতে নগদ লেনদেনের আলোচনা করা উচিত নয়। এই দিনে দেওয়া ঋণ সহজে ফেরত পাওয়া যায় না। বড় মঙ্গলের দিনে নীল বা কালো রঙের পোশাক পরিধান করা উচিত নয়। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, নীল, কালো বা ধূসর রং শুক্র ও শনির সঙ্গে যুক্ত, তাই এই রং এড়িয়ে চলা মঙ্গল। বড় মঙ্গলের উপবাস না করলেও এই দিনে পেঁয়াজ, রসুন সহ আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়।