নতুন দিল্লি, ১ অক্টোবর: দেশের তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের (ST/SC Act) বিরুদ্ধে কোনওরকম হিংসা সংক্রান্ত ঘটনা ঘটলে তা অপরাধ বৈকি। এই মর্মে এমন আইনও ছিল। তবে অনেকেই সেই আনের অপব্যবহার করছিল। ২০১৮-তে সেকারণেই এই আইনটি বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) । তবে সম্প্রতি ফের দেখা যাচ্ছে যেদলতি শ্রেণির মানুষেরা বিবিধ বঞ্চনা অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন। এসব দেখেই সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান পর্যালোচনা সংশ্লিষ্ট আইনটি ফিরিয়ে আনতে হবে। মঙ্গলবার বিচারপতি অরুণ মিশ্র (Justice Arun Mishra)–সহ তিন সদস্যের ডিভিশনবেঞ্চের রায় জানায়, সংশ্লিষ্ট আইনটি পুনর্বহাল করা হল। শীর্ষ আদালত বছর দেড়েক আগে এই মর্মে যে রায় দিয়েছিল তা এদিন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এখনও তফশিলি জাতি-উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ ‘নির্যাতন’ ও ‘বৈষম্যের’ শিকার হচ্ছেন। এখনও সমাজে জাত-পাতের বিভেদ রয়েছে। তফশিলি জাতি-উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষজন এখনও অস্পৃশ্যতা, শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতনের শিকার। আগের রায়ের প্রেক্ষিতে অরুণ মিশ্রের বেঞ্চের বক্তব্য, কোনও আইনের অপপ্রয়োগ হলে সেটা আইনের সমস্যা নয়, তার প্রয়োগের সমস্যা, যার জন্য দায়ী কোনও ব্যক্তির ব্যর্থতা। এই রায় সংবিধানের ভাবাবেগের বিরুদ্ধে বলেও মন্তব্য এই বেঞ্চের। বছর দেড়েক আগে যখন সুপ্রিম রায়ে সংশ্লিষ্ট আইনটিকে প্রায় ঠান্ডাঘরে পাঠানো হয় তখনই দেশজুড়ে প্রবল আলোড়ন ওটে। তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের বিভিন্ন সংস্থার তরফে শুরু হয় লাগাতার আন্দোলন। কেন্দ্রও দেশের শীর্ষ আদালতকে ফের বিষয়টি ভেবে দেখার আবেদন জানায়। এদিন তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি এম আর শাহ এবং বিচারপতি বি আর গাভাই-এর বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়। শুনানির পর মঙ্গলবার অরুণ মিশ্রর বেঞ্চ পুরনো আইনই ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন। আরও পড়ুন-জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের কারণ কী, একমাসের মধ্যে জবাব দিক কেন্দ্র: সুপ্রিম কোর্ট
উল্লেখ্য, ভারতীয় সংবিধানের ১৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী তফশিলি জাতি বা উপজাতি সম্প্রদায়ের কেউ নির্যাতন, অত্যাচার বা বঞ্চনার শিকার হলে তা নিয়ে অভিযোগ জানাতে পারতেন এবং ওই আইন অনুযায়ী পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার বা উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু এই ধারার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে একটি মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২০ মার্চ সেই ধারা তুলে দেয়। তখন সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের যুক্তি ছিল, সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। স্বাধীনতার পর ৭৩টি বসন্ত কেটে গেলেও সমানাধিকার যে একটা কথার কথা মাত্র তা ফের প্রমাণ হল।