নতুন দিল্লি, ২২ জানুয়ারি: অর্থনৈতিক পরিস্থিতির (Financial Condition) অবনতির জন্য মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল। এবার এই অভিযোগে যোগ হল আরও গুরুতর তোপ। জীবন বিমা নিগম বা LIC-র টাকা নিয়ে নয়ছয় করেছে মোদি সরকার। এমন টাই অভিযোগ এনেছে কংগ্রেস (Congress)। রাহুল গান্ধির (Rahul Gandhi) অভিযোগ দেশের কোটি কোটি মানুষ এই সংস্থার ওপর ভরসা রাখে। মোদি সরকার সেই ভরসা রাখার জায়গা রাখছে না।
বুধবার ট্যুইট করে রাহুল লেখেন, "দেশের কোটি কোটি মানুষ LIC-এর ওপর ভরসা রাখে। মোদি সরকার LIC-কে ধ্বংস করে তাঁদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে। সেই সঙ্গে এই সংস্থার প্রতি মানুষের যে ভরসা রয়েছে, তাও নষ্ট করেছে। মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে, যার ফল ভয়ঙ্কর হতে পারে।" তবে অর্থনীতিবিদদের (Economists) মতে, এখনই তেমন ভয় পাওয়ার মত কারণ না থাকলেও এলআইসি-র পরিস্থিতি সত্যিই আশঙ্কার। কারণ ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের প্রথম ৬ মাসে এলআইসি'র এনপিএ অর্থাৎ অনাদায়ী সম্পদ ৬.১০%। যা ইয়েস ব্যাংক (Yes Bank), অ্যাক্সিস ব্যাংক (Axis Bank) ও আইসিআইসি ব্যাংকের (ICICI Bank) মতো ধুঁকতে থাকা ব্যাংকের প্রায় কাছাকাছি। দেখা গিয়েছে, গত পাঁচ বছরে এলআইসি'র অনাদায়ী সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩,০০০০ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ইয়েস ব্যাংকের সেকেন্ড কোয়াটারের এনপিএ ছিল ৭.৩৯%, আইসিআইসি ব্যাংকের ক্ষেত্রে সেই পরিমাণ ৬.৩৭% এবং অ্যাক্সিস ব্যাংকের ক্ষেত্রে তা ৫.০৩%। কংগ্রেস অবশ্য আগেই অভিযোগ এনেছিল, LIC-র ভবিষ্যৎ সঙ্কটে ফেলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। রিজার্ভ ব্যাংক ও ভারতীয় স্টেট ব্যাংকের দুই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে এই অভিযোগ তোলেন মাকেন। অভিযোগ ছিল, ১৯৫৬ সালে গঠনের পর থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ছ'দশকে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় LIC-র মোট ₹১১.৯৪ লাখ কোটি ঢালা হয়েছিল। তবে ২০১৯-এ তা আচমকা বেড়ে ₹২২.৬৪ লাখ কোটিতে পৌঁছয়। অর্থাৎ, মাত্র ৫ বছরেই ₹১০.৭ লাখ কোটি LIC-র টাকা অন্যত্র বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছিল কংগ্রেস। তাদের দাবি, যে যে সংস্থায় LIC-র অর্থ ঢালা হচ্ছে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। আরও পড়ুন: Nithyananda Case: ধর্ষণে অভিযুক্ত নিত্যানন্দকে ধরতে এবার ইন্টারপোলের ব্লু কর্ণার নোটিস, ইকুয়েডরে নেই স্বঘোষিত গডম্যান
Crores of honest people invest in LIC because they trust it.
The Modi Govt is risking their future by damaging LIC & destroying the trust the public has in it.
These short sighted actions create panic & can have catastrophic consequences. https://t.co/F0dmk5t5uB
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) January 22, 2020
এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে IDBI ব্যাংকের কথা বলা হয়েছে। ঋণে (Lone) জর্জরিত সংস্থায় ₹২১ হাজার কোটি ঢেলে ৫১%-এর অংশীদারির মালিকানা নিয়েছে এলআইসি। তবে ওই পরিমাণ টাকার অধিকাংশই অনুৎপাদক সম্পদে (Property) চলে গেছে। এরপরও ওই ব্যাংকে আরও ₹৯৩০০ কোটি ঢালার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। যারমধ্যে ₹৪ হাজার কোটির বেশি LIC দেবে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। আবার উঠে এসেছে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (Punjab National Bank) কথা। এলআইসি এই ব্যাঙ্কের শেয়ার কিনেছে। পিএনবি–র ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব করে বিদেশে চম্পট দিয়েছেন নীরব মোদি (Nirav Modi), মেহুল চোকসিরা (Mehul Choksi)। এছাড়া এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্ক এবং কর্পোরেশন ব্যাঙ্কের শেয়ারও কিনেছে এলআইসি। সেইসঙ্গে এনটিপিসি, এনএইচপিসি, এনবিসিসি, হিন্দুস্তান কপার ও কোল ইন্ডিয়াতেই বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করেছে তারা।