রাঁচি, ৩০ ডিসেম্বরে: ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের খননকার্যে মিলল বহুতল প্রাসাদের সন্ধান। এই প্রাসাদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। ঘটনাটি ঝাড়খণ্ডের গুমলা জেলার নবরতনগড়ে। প্রাচীন ওই পরিকাঠামো দেখে মনে করা হচ্ছে এটি সাড়ে পাঁচশো বছর আগের নাগা বা নাগাবংশী সাম্রাজ্যের (Naga Kingdom)ধ্বংসাবশেষ। ২০০৯ সালে সংরক্ষণের জন্য এই নবরতনগড়কে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়। এরপর খননকার্য শুরু হতেই নাগা বংশের প্রাসাদের দেখা মিলল। লাগোয়া এলাকাতেও চলছে খনন কাজ, যেখান থেকে বহু জিনিস মেলার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। সেসব উদ্ধারের পরেই শুরু হবে পড়াশোনা, যার থেকে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ অনেক রহস্যের উদ্ঘাটন করতে পারবে। আরও পড়ুন- Tamil Nadu: নাবালক ছাত্রকে বিয়ের গেরো, শ্রীঘরে শিক্ষিকা
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়র শিবকুমার ভগত, এই খননকার্যের সুপারভাইস করছেন। তিনি জানান, আগামী মার্চ পর্যন্ত এই খননকাজ চলবে। কাজ সম্পূর্ণ হলেই প্রকাশ্যে আসবে নাগাবংশী সাম্রাজ্যের ইতিহাস। ছোটনাগপুরের নবরতনগড়থেকে নাগাবংশের শাসনভার দেখতেন ৪৫-তম রাজা দুর্জন শাল। দীর্ঘসময় রাজত্ব করেছেন তিনি।তথ্য বলছে, ১৫৭১ সালে এখানে তিনি দুর্গ তৈরি করান। নয়তলা দুর্গ তৈরি হলে, জাযগার নাম বদলে হয় নবরতনগড়। এই দুর্গের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে স্থানীয় পর্যটক, গবেষক ও পুরাতাত্ত্বিকদের আগ্রহের শেষ ছিল না। খননকাজ শুরু হওয়ার পরে এতদিনে জানা গেল। এখানে নাগাবংশীদের প্রাসাদ ছিল। মূলত মুঘলদের থেকে সাম্রাজ্য বাঁচাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এমনকী গোপন সুড়ঙ্গেরও সন্ধান মিলেছে। সেই খননকাজ এখন অব্যাহত।
দুর্গের ধ্বংসাবশেষ দেখে মনে হচ্ছে, প্রাসাদের কোনও একটি কক্ষে দুর্জন শাল লুকিয়ে রেখেছিলেন ধনসম্পদ, মণি মাণিক্য।এদিকে ধনসম্পদের মালিক হয়েও মিডুঘলদের খাজনা মেটাননি তিনি। গোয়ালিয়র জেলে ১২ বছর বন্দিও থেকেছেন তিনি। তবে জ্ঞান , শিল্পকলার চর্চা দেখে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।খননকাজে মিলবে রানিমহল, সুভদ্রা বলভদ্র মন্দির, রাজ দরবার, তেহখানা, শান্ত্রী পোস্ট, কমল সরোবর, নবরতনগড়ের পিছনে পাহাড়ের কোলে জলেশ্বরনাথ শিবলিঙ্গ, নবরতনগড়ের বাইরে সিংহদরজা, কপিলনাথ মন্দির, রাধাকৃষ্ণ মন্দির, ভৈরবনাথ মন্দির, ধোবিমঠ, রাজগুরু সমাধিস্থল, বাউলি মঠ, ভাকিল মঠ, মাউসি বাড়ি, যোধানাথ মন্দির।