মহারাষ্ট্রে আইএসআইএস সন্ত্রাসবাদী মডিউল মামলায় ছয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (National Investigation Agency) । এনআইএ তার তদন্তে আন্তর্জাতিক সংযোগের পাশাপাশি একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে এবং এমনকি ভারতে আইএসআইএস মতাদর্শ প্রচারে সক্রিয় একটি জটিল নেটওয়ার্কের জড়িত থাকার তথ্যও পেয়েছে।বিশেষ আদালতের সামনে মুম্বাইয়ের এনআইএ -র প্রকাশিত চার্জশিটে মুম্বইয়ের তাবিশ নাসের সিদ্দিকী, জুলফিকার আলি বারোদাওয়ালা ওরফে "লালাভাই", শারজিল শেখ এবং বোরিভালি-পড়ঘার আকিফ আতেক নাচান এবং জুবায়ের নূর মোহাম্মদ শেখ ওরফে "আবু নুসাইবা" এবং পুনের আদনালি সরকারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে  বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন (UAPA) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) বিভিন্ন ধারার অধীনে ইসলামিক স্টেটের সহিংস এবং চরমপন্থী মতাদর্শে সক্রিয়ভাবে প্রচারে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।এছাড়াও জানা গেছে ইরাক ও সিরিয়ার আইএসআইএস সংগঠন গুলির কায়দায় ভারতের বুকে ব্যক্তিদের নিয়োগের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ও হিংসার প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছিল এই নেটওয়ার্ক।

তবে চার্জশিটের খবর সামনে আসতেই চিন্তায় পুলিশ থেকে এন আই এ কর্মকর্তারা। কারণ ১৬ জন সাক্ষীর বক্তব্যের ভিত্তিতে চার্জশিটে গ্রেফতার হওয়া সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্তদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা তুলে ধরা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, তাদের মধ্যে দুজন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।বারোদাওয়ালা একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে 31 লাখ টাকার বার্ষিক প্যাকেজ সহ সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন, জুবেইর শেখ একটি টেক-ভিত্তিক কোম্পানির সঙ্গে রোবোটিক্স প্রসেস অটোমেশন ( RPA  ) তে টেকনোলজি বিশারদ, সিনিয়র সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন এবং শারজিল শেখ একটি আইটি ফার্মে রিটেইনার হিসাবে একটি কর্মরত ছিলেন,।এন আই এ (NIA) মুখপাত্র জানান- "অভিযুক্তরা সকলেই নিষিদ্ধ আইএসআইএস (ISIS) সংগঠনের সদস্য এবং তারা জনগণের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার এবং ভারতের নিরাপত্তা ও ধর্মনিরপেক্ষ নীতি এবং সংস্কৃতি এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলার উদ্দেশ্য নিয়ে সংগঠনের সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমকে আরও এগিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল।

জুলাই মাসে মহারাষ্ট্রের এন আই এ -র একাধিক অভিযানের সময় গ্রেপ্তার হয়েছিল অভিযুক্তরা । বিশেষ এন আই এ  বিচারক এ কে লাহোতির আদালতে দাখিল করা ৪০০০ পৃষ্ঠার চার্জশিটে ১৬জন সুরক্ষিত সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতে এদেরকে আটক করা হয়েছে।এছাড়াও অভিযুক্তদের কাছ থেকে সিরিয়ায় "হিজরা" বা অভিবাসন সম্পর্কিত অপরাধমূলক সামগ্রীও উদ্ধার করেছে এন আই এ। এছাড়া আইএসআইএস দ্বারা প্রকাশিত "ভয়েস অফ হিন্দ" এবং "ভয়েস অফ খুরাসান" এর মতো প্রচারমূলক ম্যাগাজিনগুলিও খুঁজে পাওয়া গেছে তাঁদের কাছ থেকে। "এছাড়াও, অভিযুক্তরা তাদের পরিচিতিদের সঙ্গে  Do It Yourself অর্থাৎ নিজেরাই বানিয়ে ফেলতে পারবে এমন সামগ্রীগুলি ভাগ করে নিচ্ছিল। সেইসব সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়। এছাড়া অভিযুক্তরা তাদের সন্ত্রাসবাদী পরিকল্পনা এবং ডিজাইনের অর্থায়নের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতেও শুরু করেছিল।