লাদাখ, ৩১ আগস্ট: ফের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা আগ্রাসনের চেষ্টা (Chinese PLA Violates Consensus)। তবে এবার আর পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি ভারতীয় সেনা। গত ২৯-৩০ আগস্ট রাতে সীমান্ত লাগোয়া প্যাংগং লেকের কাছে সরে এসে আস্ফালন শুরু করে লালফৌজ। এককথায় ভারতীয় সেনাদের সংঘর্ষে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রলোভন দেখাতে থাকে। তবে ভারতীয় সেনা লালফৌজের পাতা ফাঁদে পা দেয়নি। উল্টে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এই প্রসঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জনসংযোগ আধিকারিক কর্নেল আমন আনন্দ এ দিন বলেন, ‘‘সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে পূর্ব লাদাখে সঙ্ঘাত পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে যে ঐক্যমত্যে পৌঁছানো গিয়েছিল, ২৯-৩০ আগস্ট রাতে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) তা লঙ্ঘন করেছে। স্থিতাবস্থা নষ্ট করতে সেখানে প্ররোচনামূলক সামরিক পদক্ষেপ করেছে তারা।’’
তবে এই উত্তেজক পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘প্যাংগং লেকের দক্ষিণে চিনা বাহিনীর এই আগ্রাসন প্রতিহত করতে সক্ষম হয় ভারতীয় বাহিনী। সেখানে নিজেদের অবস্থান মজবুত করা গিয়েছ। একতরফা ভাবে চিন পরিস্থিতি বদলানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার পাশাপাশি আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারতীয় সেনা। লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে চুসুলে ব্রিগেড কমান্ডার স্তরের ফ্ল্যাগ মিটিং চলছে।’’ চলতি বছরের শুরু থেকেই প্যাংগং লেকের কাছে লালফৌঝোর ঘাঁটি গেড়ে বসা নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়। তবে যতই আলোচনা হোক না কেন এখনও পর্যন্ত এবিষয়ে চিনের পিছু হটার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। এরপরেই গত সপ্তাহে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে লালফৌজ যদি প্যাংগং লেক লাগোয়া এলাকা থেকে না সরে তবে সামরিক উপায়েই এর সমাধান করবে ভারত। আরও পড়ুন-Pranab Mukherjee Health Update: ফুসফুসের সংক্রমণ বাড়ায় সেপটিক শকে প্রণব মুখার্জি, জানালো সেনা হাসপাতাল
লাদাখে চিনা আগ্রাসন সংক্রান্ত এএনআই টুইট
On the night of 29/30 August, PLA troops violated the previous consensus arrived at during military & diplomatic engagements during an ongoing standoff in Eastern Ladakh and carried out provocative military movements to change the status quo: Col Aman Anand, PRO, Army pic.twitter.com/mSjoZJ4Ijg
— ANI (@ANI) August 31, 2020
Indian troops pre-empted this PLA activity on the Southern Bank of Pangong Tso Lake, undertook measures to strengthen our positions and thwart Chinese intentions to unilaterally change facts on ground: Col Aman Anand, PRO, Army https://t.co/oTQNAw5ebr
— ANI (@ANI) August 31, 2020
তবে এদিনের হামলায় চিনের তরফে ঠিক কী ধরনের সামরিক পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা যদিও খোলসা করেননি কর্নেল আমন আনন্দ। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই গালওয়ানে ভারত-চিন পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্যে বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর বলেছিলেন, '১৯৬২-র (ইন্দো-চিন যুদ্ধ) পর সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।' গত জুনে পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের সেনার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর দু'দেশের সীমান্ত সংঘর্ষে সেনা মৃত্যু হয়। ভারতীয় তরফে কর্নেল-সহ ২০ জন এবং চিনের তরফে ৪৩ জন হতাহত বলে জানা যায়। ভারতের দাবি ছিল, চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা না-মানার ফলেই লাদাখের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। চিনের অবশ্য পাল্টা দাবি ছিল, ১৫ জুনের রাতের গোটা ঘটনার পিছনে ভারতের প্ররোচনা রয়েছে।