গত শুক্রবার থেকে গাজায় চলা চারদিনের সংঘর্ষ বিরতি বা যুদ্ধবিরতি আজ, সোমবার শেষ হচ্ছে। ইজরায়েল সরকার ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি চুক্তিতে বলা ছিল ইজরায়েলি পণবন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় চারদিন যুদ্ধবিরতি চলবে। সেই মত আপাতত সব ঠিকঠাক চলছে। চুক্তি অনুযায়ী, মঙ্গলবার স্থনীয় সময় সকাল ৭টা থেকে গাজায় ইজরায়েলের অভিযান শুরু হতে আর কোনো বাধা থাকবে না।
গত তিনদিন ধরে হামাস জঙ্গিরা গাজা থেকে গড়ে প্রতিদিন ১৩ জন করে ইজরায়েলি ও বেশ কিছু বিদেশীদের মুক্তি দিয়েছে। ইজরায়েলেও তাদের জেলে বন্দি থাকা বেশ কয়েকজন প্য়ালেস্ট্য়ানিয় জঙ্গি বা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মুক্তি দিয়েছে। গাজায় গত তিনদিনে খাদ্য, ওষুধ, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, জ্বালানি তেল বোঝাই বেশ কয়েকটি ট্রাক, গাড়ি ঢুকেছে। গত তিনদিন ধরে গাজা যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কিন্তু সেসব আজই শেষ হওয়ার কথা। আরও পড়ুন-যুদ্ধের মাঝে ইজরায়েলে গিয়ে বড় চুক্তি সারলেন ইলন মাস্ক, স্টার লিঙ্ক পরিষেবা মিলবে গাজাতে
আর সেটা হলে আবার গাজা মানেই বিস্ফোরণ, রক্ত-মৃত্যু, গাজা মানেই হামাস সুড়ঙ্গ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা হতে চলেছে। গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের সীমান্ত টপকে হামাস জঙ্গিদের নজিরিবিহীন হানার পরই গাজায় আক্রমণ শুরু করে ইজরায়েল। এরপর টানা ৪৮দিন গাজায় আক্রমণ করে হামাসকে পুরোপুরি চাপে ফেলে দিতে পেরেছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ। তবে তার বিনিময়ে বহু সাধারণ মানুষের জীবন গিয়েছে। ধ্বংস হয়ে গিয়েছে মসজিদ, গির্জা, হাসপাতাল, স্কুল সহ উত্তর গাজার প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়ি। যদিও ইজরায়েলের দাবি হামাস জঙ্গিদের কবল থেকে সাধারণ প্যালেস্টাইনিদের রক্ষা করেই এই হামলা চলছে। আর হামাসরা শিশু, মহিলাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে গোটা বিশ্বে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছে। হাসপাতালের মধ্যে অস্ত্রাগার বানানোর কারণে তাদের দেশের সেনাদের সেখানে ঢুকতে হয়েছে বলে দাবি ইজরায়েলের। হামাসের দাবি অবশ্য সম্পূর্ণ উল্টো। তাদের জাবি ইজরায়েলের হানায় প্যালেস্টাইনের ১৫ হাজারের বেশী সাধারণ মানুষের মৃত্য়ু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে সাড়ে ৫ হাজার শিশু।
গাজা যাতে যুদ্ধবিরতি আরও দীর্ঘ হয় সেটা নিশ্চিত করতে ময়দানে নামল ন্য়াটো। ন্য়াটো প্রধান সরাসরি ইজরায়েল সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানালেন। সঙ্গে ন্যাটো প্রধান জানিয়েছেন, হামাসকে ইজরায়েলের সব পণবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। ইজরায়েল সরকারের দাবি, তারা আরও কিছুদিন যুদ্ধবিরতিতে রাজি আছেন, তবে তার জন্য হামাসকে রোজ অন্তত ১০ জন করে ইজরায়েলি পণবন্দিদের ছাড়তে হবে। এখনও হামাসের হাতে ইজরায়েলের ১৪৮ জন পণবন্দি অবস্থায় আছেন।