Jangipu Violence (Photo Credit: X@ANI)

টানা ১৩ ঘণ্টা দীর্ঘ বিতর্ক এবং ভোটাভুটির পরে গত ৩ এপ্রিল মধ্যরাতে লোকসভায় পাস হয় ওয়াকফ সংশোধনী বিল, ২০২৫ (Waqf (Amendment) Act 2025)। প্রধান বিরোধী দলগুলো বিলটির বিরোধিতায় একজোট হয়েও এর পাস হওয়া ঠেকাতে পারেনি, পরদিন অর্থাৎ ৪ এপ্রিল শুক্রবার রাজ্যসভাতেও অনায়াসেই পাস হয়ে যায় সরকারের আনা এই বিল। দুই কক্ষে পাস হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু  (President Draupadi Murmu) তাতে সই করেন, যার ফলে এটি এখন ভারতের একটি আইনে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, এর ফলে সার্বিক ভাবে মুসলিমদের উন্নতি হবে। ক্ষমতায়ন হবে মুসলিম মহিলাদের। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, এর আইন ওয়াকফ বোর্ডের (Waqf Board) ক্ষমতাকে খর্ব করে মুসলিমদের অধিকার হরণ করবে।

গত সপ্তাহ থেকেই বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিরোধীদলগুলি। বিক্ষোভে সামিল হয়েছে জনতাও। গত শুক্রবার পার্ক সার্কাসে বিলের প্রতিবাদে সরব হয় জয়েন্ট ফোরাম অফ ওয়াকফ প্রোটেকশন (Joint Forum of Waqf Protection)। বিক্ষোভকারীরা পার্ক সার্কাস মোড়ে ব্যারিকেড সরিয়ে দিলে বাধা দেয় পুলিশ। শুরু হয় বচসা। বিক্ষোভ সভায় উপস্থিত ছিলেন কলকাতা খিলাফত কমিটির চেয়ারম্যান মন্ত্রী জাভেদ খান (Javed Khan) সহ অনেকে।

এরপর গতকাল (৮ এপ্রিল) পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের (Waqf (Amendment) Act 2025) প্রতিবাদে বিক্ষোভ ঘিরে  তুলকালাম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতার নামে মঙ্গলবার দুপুরে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের উমরপুরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে জনতা। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে তাদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় অবরোধকারীদের। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। আগুন দেওয়া হয় একের পর এক পুলিশের গাড়িতে। উন্মত্ত জনতার আক্রমণে ২ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এর জেরে দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে ছিল জাতীয় সড়ক। সন্ধ্যার পর বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করে টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটিয়ে তাণ্ডবকারীদের রাস্তা থেকে সরানো হয়। এর পর শুরু হয় যানচলাচল। পুলিশের দাবি এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

প্রথম থেকেই সংশোধিত ওয়াকফ আইনের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীদের অভিযোগ কেন্দ্র সরকারের এই উদ্যোগ ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতাকে খর্ব করে মুসলিমদের অধিকার হরণ করবে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে সোশাল মিডিয়ার এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন -দীর্ঘ সময়কালজুড়ে ওয়াকফ পদ্ধতিতে কোনও স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতা ছিল না। তার জেরে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মুসলিম মহিলারা। এতকাল যাবৎ গরিব মুসলিমদের স্বার্থরক্ষার বিষয়টি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নতুন ওয়াকফ আইনে স্বচ্ছতা আসবে। সুনিশ্চিত হবে মানুষের অধিকার।