শান্তিনিকেতন, ১ মার্চ: দিল্লিতে হিংসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন (Nobel laureate Amartya Sen)। শনিবার তিনি বলেন যে ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ এবং মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করা যায় না। তিনি বলেন, পুলিশ অদক্ষ কি না বা হিংসা মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রচেষ্টার অভাব ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত। শনিবার শান্তিনিকেতনে প্রতীচী ট্রাস্ট আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিল্লি হিংসার ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অমর্ত্য সেন। পুলিশের দক্ষতার অভাবে এমন ঘটনা ঘটেছে না কি হিংসা বন্ধে সরকারি নিষ্ক্রিয়তার অংশ হিসেবে পুলিশ তৎপর হয়নি, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানিয়ছেন তিনি।
নোবেলজয়ী বলেন, "দিল্লি দেশের রাজধানী এবং এটি কেন্দ্র শাসিত। সেখানে যা ঘটেছে তাতে আমি চূড়ান্ত উদ্বিগ্ন। সেখানে সংখ্যালঘুরা যদি নির্যাতিত হয় এবং পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয় বা পুলিশ তার দায়িত্ব না পালন করে, তবে সেটা সত্যিই গভীর উদ্বেগের বিষয়। ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এখানে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করা যাবে না।" তিনি আরও বলেন, "খবরে জানা গেছে যে যারা মারা গেছে বা যাদের নির্যাতন করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগই মুসলমান। ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, আমরা হিন্দু ও মুসলমানকে বিভক্ত করতে পারি না। ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন হওয়া ছাড়া আমার আর কিছু করার নেই।" তবে তিনি জানান, পুরো বিষয়টি বিশ্লেষণ না করে তিনি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চান না। আরও পড়ুন: Amit Shah Rally In Kolkata: আজ শহিদ মিনারে সভা অমিত শাহের, 'অমিত শাহ গো ব্যাক' স্লোগান দেওয়ার কর্মসূচি বামেদের
বিচারপতি এস মুরলীধরকে দিল্লি হাইকোর্ট থেকে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলি কর নিয়েও প্রশ্ন উত্থাপন করা স্বাভাবিক বলে তিনি মন্তব্য করেন। অমর্ত্য সেন বলেন, "আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে চিনি। প্রশ্ন উত্থাপন করা স্বাভাবিক। কিন্তু আমি কোনও রায় দিতে পারি না।"
সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের সমর্থনে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন বাংলাদেশের কুস্টিয়া থেকে বিশ্বভারতীর কলা ভবনে পড়তে আসা আফসারা অনিকা মিমকে। আচার্য নরেন্দ্র মোদি, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, বিদেশ মন্ত্রক এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক তাঁর বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দিয়েছিল এবিভিপি-র বিশ্বভারতী শাখা। বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন কলকাতার ফরেনার্স রিজিয়োনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস ১৫ দিনের মধ্যে মিমকে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনায় অমর্ত্য সেন বলেন, "আমার কাছে কোনও বিশদ তথ্য নেই। সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুসারে, তাঁকে দেশ ছাড়তে বলার জোরাল কোনও কারণ আমি এখনও পাইনি।"