হিমের রাত। একটু একটু কুয়াশা। রাতের দিকে শিরশিরানি। শীত শীত গন্ধ। এমনই একটা সময় পাশ্চাত্যে আসে হ্যালোউইন।  অক্টোবর মাসের শেষ দিন পালিত হয় সর্বজনস্বীকৃত এই  ভূতেদের দিন। পশ্চিমের দেশগুলিতে  মৃত এবং বিদেহী ব্যক্তিদের স্মরণ করার জন্য ভূতের মতো পোশাক পরে আসল ভূতকে দূরে রাখতে প্রধানত পালিত হয় হ্যালোউইন! হ্যালোউইন All Hallows' Eve নামেও পরিচিত। এখন কেবলমাত্র পশ্চিমী দেশগুলিতেই নয়, ভারতের মতো আরও অনেকেই দেশেও ধূমধাম করে হ্যালোউইন উদযাপন করা হয়।এমনকী বলি তারকারাও বর্তমানে মেতে ওঠেন হ্যালোইন উদযাপনে। বলা চলে হাল আমলের এটি একটি ট্রেন্ড।

প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর সারা বিশ্বের খ্রিস্টানরা এই দিনটি পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে উদযাপন করে। কেল্টিক সম্প্রদায় প্রায় দুই হাজার বছর আগে এসেছিল পৃথিবীতে আর এই হ্যালোউইন ছিল Samhain-র প্রাচীন কেল্টিক উত্‍সব। ফসল কাটার মরসুমের শেষ হিসেবে হ্যালোউইন পালিত হত।কেল্টিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বছরের প্রথম দিন ১ নভেম্বর। যা শীতের মাসগুলির সূচনাও চিহ্নিত করে। কেল্টিকরা আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং উত্তর ফ্রান্সের অঞ্চলগুলির অন্তর্গত ছিল। তারা বিশ্বাস করত যে, হ্যালোউইনের প্রাক্কালে, জীবিত এবং মৃতের মধ্যে কোনও সীমানা থাকে না এবং আত্মারা অবাধে সব জায়গায় চলাচল করতে পারে। অর্থাত্‍ জীবিতের সঙ্গে মিলিত হন মৃতেরা, জাগতিক সব কিছুর সঙ্গে মিলে যায় ভৌতিক যা কিছু।

এই উৎসবে হ্যালোইন পোশাক পরে পার্টিতে অংশ নেওয়া, কুমড়ো খোদাই করা, মজা করা, ভুতুড়ে গল্প বলা, ভৌতিক সিনেমা দেখা এবং ভুতুড়ে আকর্ষণীয় বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ হয়। শোনা যায়, আয়ারল্যান্ডবাসীরা এদিন হ্যালোইনের পোশাক পরে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মৃতদের জন্যে গান গাইত এবং পারিশ্রমিক হিসাবে তাঁদের তাঁদের কেক দেওয়া হত।

এটা বিশ্বাস করা হয় যে উত্তর আমেরিকাতে পরিযায়ীরা প্রচলিত শালগমের জায়গায় কুমড়োর ব্যবহার শুরু করেছিলেন কারণ এটি নরম এবং বৃহত্তর ছিল।হ্যালোউইনে তাই কুমড়ো খোদাই করার রীতির প্রচলন শুরু হয়। বছরের পর বছর ধরে, কুমড়ো জ্বালাতে থাকে লোকেরা। আর এভাবেই হ্যালোউইনে এটি প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। অনেকে তাদের বাড়িতে কাকতাড়ুয়া এবং ভুট্টার ভুষি দিয়ে সাজায়।