লন্ডন, ১৩ আগস্ট: পেটের ব্যামো তাড়াতে গিয়ে যে দাঁতকপাটি শত্রু হবে কেই বা জানত। বোঝেননি বাহাত্তুরে বুড়োও তাই ফল পেলেন হাতেনাতে। তখন তাঁর ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি দশা। হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে জুতোর শুকতলা ক্ষয়ে যাওয়ার জোগাড়, শেষটায় মিলল মুক্তি। কণ্ঠনালি থেকে নকল দাঁত সরতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন হাসপাতালের শল্য চিকিৎসকরা। স্বস্তি ফিরল বৃদ্ধের জীবনে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূ্র্ব ইংল্যান্ডের জেমস পেজেট হাসপাতালে। গুরুতর পেটের রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন বৃদ্ধ জ্যাক। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানতে পারেন জ্যাকের পেটে দীর্ঘদিন ধরে যে অস্বস্তি দানা বেঁধেছে তা একটি লাম্পের কারণে। প্রায় নির্বিষ এই লাম্বটি পেটের মধ্যেই বাড়ছে ক্রমশ। আরও পড়ুন-বুলেটের আঁচড় ভুলে সবুজায়নে ঢাকুক পাকিস্তান, গাছের চারা পুঁতে ইসলামাবাদ ছাড়লেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত, ছবি ভাইরাল
প্রথম দিকে অস্বস্তি না হলেও পরে সমস্যায় পড়েন ওই বৃদ্ধ। তড়িঘড়ি জেমস পেজেট হাসপাতালে ছোটেন তিনি। নির্বিঘ্নে পরীক্ষা মিটলে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। অপারেশন মিটলে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে যান জ্যাক। তবে শুরু হয় নতুন সমস্যা, দেখেন চেষ্টা করেও শ্বাস নিতে পারছেন না তিনি। তরল ছাড়া কিছুই খেতে পারছেন না। গলা থেকে মাঝেমাঝে রক্তও পড়ছে। এমতাবস্থায় ফের হাসাপাতলে গেলে ডাক্তারবাবুরা তাঁকে খানকতক অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে বিদায় করেন। তাতে কোনও লাভ না হওয়ায় ফের হাসপাতালে যান জ্যাক। কেননা ততদিনে শ্বাসকষ্ট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, এবার চিকিৎসকদের টনক নড়ে। গলার এক্সরে করলে দেখা যায় ভোকাল কর্ডে আটকে আছে নকল দাঁতকপাটি। তারপর তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচার করে সেই দাঁত বের করা হয়। একেবারে টানা আটদিন যন্ত্রণা ভোগ করে স্বস্তি পান বৃদ্ধ জ্যাক।
সোমবার ব্রিটিশ জার্নালে এই খবর প্রকাশিত হতেই সেদেশে হইহই শুরু হয়েছে। সাধারণত রোগী বা রোগিণীর যদি নকল দাঁত থাকে তাহলে অপারশনের আগে তা তাঁর অনুমতি নিয়ে খুলে রাখা হয়। কিম্বা ভালো করে মাড়ির সঙ্গে ক্লিপ দিয়ে সিল করে দেওয়া হয়, যাতে অপারেশনে কোনও বিঘ্ন না আসতে পারে। ব্রিটেনে এমন নিয়মই প্রচলিত রয়েছে। তারপরেও জেমস পেজেট হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা কেন বিষয়টি দেখলেন না তানিয়েউ শুরু হয়েছে গুঞ্জন। এককথায় ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। মোদ্দা কথা হল শুধু ভারতের হাসপাতালেই নয় বিদেশেও যে ডাক্তারবাবুদের গাফিলতির শিকার হন রোগীরা তা এই ঘটনাই প্রমাণ করে।