মখমলি মাংসের স্বর্গীয় স্বাদ, রমজান মাসে হালিমেই মজে বাঙালি
সুস্বাদু হালিম(Photo Credit: Wikimedia Commons)

রমজান মাস মানেই হালিম(Haleem), ভোজন রসিক বাঙালি(Foodie Bengali) , খিদিরপুর থেকে জাকারিয়া স্ট্রিট, বেক বাগান থেকে মল্লিক বাজার, যেখানেই যাবে বাটি ঊষ্ণ গরম হালিম যেন তারই অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। তাই রোজা এলেই এই আরবের খাবারের স্বাদ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে কলকাতা(Kolkata)। ইফতারের(Iftar) সময় হলেই হালিমের আউটলেটে উপচে পড়ে ভিড়।

বিভিন্ন রকম শস্যদানা ও ডালের মিশ্রণে ভেসে থাকা মখমলি মাংসের টুকরো যেন স্বর্গীয় স্বাদ নিয়ে প্লেটে অপেক্ষা করছে। একবার শুধু জিভ বাড়িয়ে চেখে নিন, হলফ করে বলতে পারি দূরে সরে থাকতে পারবেন না। কলকাতার এত প্রিয় হালিম কিন্তু বাংলা তথা ভারতের খাবারই নয়। আরব দেশের খাবার হারিসা থেকেই হালিমের আগমন। খ্রিষ্টীয় দশম শতকে কিতাব-আল তাবিক নামের একটি বইতে প্রথম হালিমের উল্লেখ পাওয়া যায়। ভারতীয় উপমহাদেশে হালিম এসেছে আরবের সৈন্যদের(Soldiers of Arabia) হাত ধরে। মূলত হালিম শুধু সুস্বাদুই নয়। এই খাবার রোজাদারের পেটকে ঠান্ডা করে, হজমশক্তি বাড়ায়, হালিমে খাদ্যমূল্য অনেক বেশি একসঙ্গে এতরকম ক্যালোরি মিশে থাকে যে ভিটামিন ও প্রোটিনের ঘাটতি সহজেই দূর হয়ে যায়। তবে বাঙালি মুসলিমদের মধ্যে ঠিক তেমনভাবে হালিম খাওয়ার চল এখনও গড়ে ওঠেনি। কলকাতার শহুরে পরিবেশ ছাড়িয়ে গ্রাম বাংলার হেঁসেলে ঢুঁ মারলে জানবেন, হালিম নামের খাবার যে ভূভারতে আছে তা অনেকেই জানেন না।

এই হালিম কিন্তু এখন হায়দরাবাদি খাবার। রোজার মাসে হায়দরাবাদে হালিম বিক্রির বাজার দেখলে চোখ কপালে উঠবে। এই সময় প্রায় ১০০ কোটির ব্যবসা করে ফেলেন হালিম বিক্রেতারা। তবে কলকাতার হালিমে মাংসের টুকরোকে আপনি একটা অবয়বে অনুভব করবেন। কিন্তু হায়দরাবাদের হালিম তো মুখে দিলেই গলে যাবে। ডালের মিশ্রণে মাংসও পেস্ট হয়ে থাকে। সঙ্গে একশাহি গন্ধ আপনার মনকেও মাতিয়ে তুলবে। এক চামচ মুখের ভিতরে যেতেই আবেশে বুজে আসবে চোখ। কখন যে প্লেট খালি করে ফেলেছেন মনেই করতে পারবেন না। তবে ১০০ কোটি নাহোক রমজান মাসে কলকাতার বাজারেও হালিম ই খাবারের রাজা। তাই এখানেও ব্যবসাপাতি ভালোই জমে। তবে হালিমের নির্দিষ্ট রেসিপি নিয়ে বিবিধ দ্বন্দ্ব রয়েছে। কোনও প্রসিদ্ধ রেস্তরাঁর বাবুর্চিই সেই রেসিপি(Recipe) বেহাত হতে দিতে নারাজ। তাই দোকান ভেদে স্বাদও যায় বদলে। একেবারে নতুন রূপে ধরা দেয় সাধের হালিম।