One Year Of Pulwama Attack: পুলওয়ামা হামলার এক বছর পেরিয়ে ৪০ শহীদকে চিঠি লিখলেন NSG-এর প্রাক্তন ডেপুটি কম্যান্ডান্ট তথা RAW কর্তা দীপাঞ্জন চক্রবর্তী, পাতার জোগান দিল লেটেস্টলি বাংলা
পুলওয়ামা হামলা (Photo Credits: PTI)

পূজা মণ্ডল, ১৪ ফেব্রুয়ারি: দেশের অর্থনীতি (Economy Of India) থেকে নানান অভ্যন্তরীণ সমস্যা। দমবন্ধ করা চাপের সৃষ্টি হতে শুরু করেছে তখন দেশের শাসকদলের ওপর। লোকসভা নির্বাচন আসন্ন। সালটা ২০১৯ (General Elections 2019)। তাই বলা ভালো ভারতের সবথেকে বড় বিপণন বিশেষজ্ঞ স্বপ্নের কারবারী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ওপর। ভারতের মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন কোথায় গেল পনেরো লাখ? কোথায় গেল দু’‌কোটি চাকরি? ‘‌আচ্ছে দিন’‌ তো দুরস্ত মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম বিভীষিকা। এমন পরিস্থিতিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি যেন তাঁকে দ্বিতীয়বার ভারতের মসনদে বসার সোপান সাজিয়ে দিল। কেঁপে উঠল ভূস্বর্গ (Kashmir)। আঁচ আছড়ে পড়ল গোটা ভারতে। দায় স্বীকার করল জইশ-ই-মোহম্মদের মত জঙ্গি দল। কিন্তু রিমোট কন্ট্রোলটা কি ছিল অন্য কারোর হাতে? ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা দিবসের এক বছরে লেটেস্টলি বাংলার সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনে শহীদদের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে প্রশ্নটা সামনে আনলেন NSG-এর প্রাক্তন ডেপুটি কম্যান্ডান্ট তথা RAW কর্তা দীপাঞ্জন চক্রবর্তী (Ex NSG Deputy Commandant-Research and Analysis Wing (RAW) Officer Dipanjan Chakraborty)।

পুলওয়ামা হামলা বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিল। আর এই প্রশ্ন করা মানুষগুলো মুহূর্তের মধ্যে দেশদ্রোহী উপাধিও পেয়ে গেল। একশো দিনের মধ্যে সেই বিপণন বিশেষজ্ঞ উগ্র জাতীয়তাবাদের ঝোড়ো হাওয়ায় উড়িয়ে দিলেন বিরোধীদের। ৩০৩-এ ফের দেশের সর্বোচ্চ আসনে চড়লেন তিনি। ৪০ শহিদের রক্তমাংস দিয়ে তৈরি হল সেই সিংহাসন। ভারত সরকারের সর্বোচ্চ কমান্ডোবাহিনী এনএসজি এবং ‘‌র’‌–‌এর দীর্ঘ দু’‌দশকের অভিজ্ঞতা নিয়ে এই সমস্ত কথাগুলো বলতে বলতে দীপাঞ্জনবাবুর কণ্ঠ তখন জোরালো হয়ে এসেছে। তিনি বললেন 'কোথাও একটা পচনের গন্ধ কিন্তু রয়েই গেল!' কেননা পুলওয়ামা বিস্ফোরণের ঠিক ৬ দিন আগে জম্মু–‌কাশ্মীর পুলিশের এক সিনিয়র অফিসারের স্বাক্ষর করা একটি সরকারি নির্দেশনামা সিআরপিএফ, জম্মু–‌কাশ্মীর পুলিশ, আইবি এবং সামরিকবাহিনী–‌পুলিশ যৌথ কমান্ডোর সর্বোচ্চ অধিকারীদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। ‌আমার কাছে এই দলিলের প্রতিলিপিও (Xerox Copy) রয়েছে‌। তৎকালীন জম্মু–‌কাশ্মীরের রাজ্যপাল (Governor) সংবাদ মাধ্যমের সামনে ঘটনার দিনই স্বীকার করেছিলেন সেই নির্দেশনামার ব্যাপারে। যেখানে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, খুব শীঘ্রই সামরিক বা আধাসামরিক বাহিনীর ওপর অত্যন্ত বড় মাপের আইইডি হামলা হতে চলেছে। তার পরেও সিআরপিএফ এত বড় কনভয় নিয়ে কী করে বাধ্যতামূলক আকাশপথে নজরদারি ছাড়াই এতটা রাস্তা প্রায় ৭৮টি গাড়ি এবং ২৫০০–এর বেশি লোক নিয়ে যাত্রা করেছিল? কেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সিআরপিএফ–‌এর আবেদন এই এত বড় বাহিনীকে আকাশপথে নিয়ে যাওয়াকে অস্বীকার করে, না মঞ্জুর করে! একজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে এইসব প্রশ্নগুলো এখনও আমাকে তাড়া করে বেড়ায়। দেশের গোয়েন্দা বিভাগের এত বড় ব্যর্থতা কী করে হল?‌ আর এর জ্বলজ্যান্ত প্রতিফলন দিল্লির বিধানসভা  ভোট। বিভিন্ন মহলেই এ নিয়ে কথা  ছড়িয়েছে যে 'জাতীয়তাবাদ'কে সামনে রেখে হয়তো লোকসভায় জেতা যায়। কিন্তু রাজ্যের গণ্ডিতে শিকে ছিঁড়তে গেলে চাই 'উন্নয়ন।' শুধু দিল্লি কেন তাঁর উদাহরণ হতে পারে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় থেকে মহারাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফল। মানুষ বলছেন আর 'পাকিস্তান'-এর ঘাড়ে বন্দুক রেখে বৈতরণী পার করা যাবে না। ২১-এ কোনও 'ম্যাজিক' কাজ করবে না, কথা বলবে 'লজিক।' আরও পড়ুন: One Year Of Pulwama Attack: আজ পুলওয়ামা শহিদদের শ্রদ্ধাস্মরণ কলকাতার শাহীন বাগে

কাশ্মীরে নিরাপত্তার দায়িত্বে বেশ কিছুদিন মোতায়েন ছিলেন দীপাঞ্জনবাবু। সেই সময়কার বেশ কিছু অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে প্রাক্তন সেনাকর্তা এদিন আরও বললেন, কাশ্মীর উপত্যকার প্রতিটি জেলা, শহর থেকে গ্রামেও আইবি, কাশ্মীর পুলিশের নিরাপত্তা চক্ষু সদা জাগ্রত। বলা ভালো সেখানকার কোনও বাড়িতে স্বাভাবিকের থেকে যদি বেশি দশ কিলো চালও যায়, সেই খবর পৌঁছে যায় গোয়েন্দাদের কাছে। এমন পরিস্থিতিতে কী করে পাচার হল তিনশো কিলো আরডিএক্স (RDX)? এই ঘটনা ভাবতে বাধ্য করে আমরা কতটা নিরাপদ আছি! আমাদের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা আদৌ সুরক্ষিত?