মধু শ্রাবণী উৎসব পরিচিত মধু শ্রাব নামেও। দেশের অনেক জায়গায় শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয় মধুশ্রাবণী উৎসব। এই উৎসব বিশেষ করে পালন করা হয় বিহার, ঝাড়খন্ড এবং উড়িষ্যায়। মিথিলা সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে পালন করা হয় এই ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব। ঐতিহ্য অনুসারে, নববিবাহিত মহিলারা তাদের মাতৃগৃহে পালন করেন মধুশ্রাবণী উপবাস। এই উপবাস ১৪ দিনের জন্য হয়, শ্রাবণ কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চমী থেকে শুরু হয় এবং শ্রাবণ শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে শেষ হয়। এই দিনে পুজো করা হয় ভগবান শিব ও মাতা পার্বতীর।

ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে, ২০২৪ সালে মধুশ্রাবণী উপবাস ও পুজো করা হবে ৭ আগস্ট। মান্যতা রয়েছে যে মধু শ্রাবণীর উপবাস ও পুজো করলে মহাদেব এবং দেবী পার্বতী প্রসন্ন হয়ে জীবনের সমস্ত সমস্যা দূর করে দেন। বিয়ের পর বিবাহিত মহিলারা তাদের বাপের বাড়ি এসে করেন প্রথম মধুশ্রাবণী উপবাস। বাবার বাড়ি পৌঁছানোর পর থেকে মধুশ্রাবণী পর্যন্ত স্বামীর বাড়ি থেকে আসা খাবার খান ওই বিবাহিত মহিলারা। মধুশ্রাবণীর ১৪তম দিনের উৎসবের দিন কোনও প্রকার লবণ গ্রহণ করেন না উপবাস করা মহিলারা। এই সময়কালে দেবী পার্বতী, দেবী ষষ্ঠী, নাগ দেবতা, সূর্য, চন্দ্র এবং নবগ্রহের পুজো করা হয়। তবে এই উৎসবের প্রধান পুজো করা হয় শ্রাবণ শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে।

মধুশ্রাবণী হিন্দু ধর্মের একমাত্র আধ্যাত্মিক উৎসব, যার পুজো সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে সম্পন্ন করেন একজন মহিলা পুরোহিত। স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনা করে স্ত্রী তার মাতৃগৃহে এই উপবাস ও পুজো করলেও পুজোর সমস্ত উপকরণ এবং উপবাসের পর সকল খাদ্যসামগ্রী আসে শ্বশুরবাড়ি থেকে। এছাড়া এই দিনে পরার শাড়ি ও প্রসাধনীও আসে শ্বশুরবাড়ি থেকেই। এই দিনে সনাতন পদ্ধতিতে পুজো করা হয় ভগবান শিব, দেবী পার্বতী এবং নাগ দেবতার। পুজোর সময় ভক্তদের জন্য ভগবান শিবের গল্প বর্ণনা এবং তাদের সুখী বিবাহিত জীবন যাপনের কথা বলেন মহিলা পুরোহিতরা। বিবাহিত মহিলারা ভগবান শিবের স্তোত্র গাওয়ার মাধ্যমে স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনা করে।