প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের দশমীতে পালন করা হয় বটুক ভৈরব জয়ন্তী। হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্র অনুসারে, এই দিনে বটুক ভৈরব অবতার নিয়েছিলেন ভগবান শিব। ধর্মীয় শাস্ত্র অনুযায়ী, তন্ত্রশাস্ত্রের জন্য ভগবান রুদ্র 'ভৈরব' নামে পরিচিত। শিবপুরাণে ভগবান শিবের সম্পূর্ণ রূপ বর্ণনা করেছেন ভৈরব। ভগবান শিব এবং ভৈরবনাথ, একে অপরের প্রতিরূপ বলে মনে করা হয়। এককথায়, ভগবান শিবের ভয়ঙ্কর, রাক্ষস এবং হিংস্র রূপ হল বটুক ভৈরব। বটুক ভৈরবের পুজো করলে শত্রুদের ষড়যন্ত্র বিফলে যায়। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে, ২০২৪ সালে ১৬ জুন, রবিবার পালন করা হবে বটুক ভৈরব জয়ন্তী।

বাড়িতে বটুক ভৈরবের পুজো হয় না। বটুক ভৈরব জয়ন্তীর দিন সূর্যোদয়ের আগে স্নান করে বটুক ভৈরবের ধ্যান করে উপবাসের সংকল্প নেওয়া হয় এবং মনস্কামনা পূরণের জন্য প্রার্থনা করা হয়। এরপর বটুক ভৈরব বা শিব মন্দিরে গিয়ে পুজো করতে হবে। রবিবার বটুক ভৈরব জয়ন্তী হওয়ায় এই দিনের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। মান্যতা রয়েছে, রবিবার ভগবান বটুক ভৈরবের পুজো করলে শক্তি, বুদ্ধি, জ্ঞান, সম্মান লাভ হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, রাহু-কেতু সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে এই পুজো খুবই ফলদায়ক।

প্রাচীনকালে আপদ নামের এক অসুর ছিল। ক্ষমতা লাভের পর তার অত্যাচার ক্রমাগত বাড়তে থাকে। তিনি স্বর্গ, মর্ত্য, পাতাল এই তিন জগতেই বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিলেন। মানুষের মধ্যে তার প্রতি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আপদ আশির্বাদ পেয়েছিলেন যে কোনও দেবতা বা দেবী তাকে হত্যা করতে পারবে না। মাত্র ৫ বছরের শিশু তাকে হত্যা করতে পারে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য সমস্ত দেব-দেবীরা শিবের কাছে গিয়েছিলেন, শিবের কৃপায় এবং দেব-দেবীর শক্তিতে ৫ বছরের একটি শিশু রূপে আবির্ভূত হন ভগবান শিব। শিশুটির নাম রাখা হয় বটুক ভৈরব। এরপর বটুক ভৈরবের সঙ্গে যুদ্ধ হয় আপদের, অবশেষে ভগবান বটুকের হাতে মৃত্যু হয় আপদের।