উত্তরপ্রেদেশ (Photo Credits: PTI)

লখনউ ও বেঙ্গালুরু, ১৯ ডিসেম্বর: এবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (CAA) প্রতিবাদের ডেউ আছড়ে পড়ল উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) ও কর্ণাটকে (Karnataka)। সরকার বিরোধী বিক্ষোভ দানা বাঁধছে বুঝতে পেরেই বুধবার মধ্যরাতে যোগীর রাজ্যে জারি হল ১৪৪ ধারা (Article 144)। একই সঙ্গে সমস্ত রকম মিছিল মিটিং সমাবাশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হল। রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক ওপি সিং এদিন রাতে টুইটারে বলেছেন, “১৪৪ ধারা জারি হয়েছে এবং আগামী ১৯ ডিসেম্বর কোনও ধরনের জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হয়নি। দয়াকরে এতে অংশ নেবেন না। অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ আপনারা আপনাদের সন্তানদের বোঝান।” রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই নাকি এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

একইভাবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠছিল কর্ণাটকের রাজধানী শহর বেঙ্গালুরু। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবাদের আঁচ টেরে পেয়েই প্রমাদ গুনেছে কর্ণাটক সরকার। বুধবার তড়িঘড়ি সেখানেও জারি হল ১৪৪ ধারা। এরপর বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “অনুমতি ছাড়াই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে নানা জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে। তাতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বৃহস্পতিবার ভোর ছ’টা থেকে ২১ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত বেঙ্গালুরুতে কোনও জমায়েত বা মিছিল করতে দেওয়া যাবে না।” আরও পড়ুন-Amit Shah: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতার আগে ১৯৪৭-এর গান্ধী-নেহরুর বিবৃতি পড়ুক কংগ্রেস, কেন বললেন অমিত শাহ?

বৃহস্পতিবার সিএএ এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে একাধিক সংগঠনের তরফে শহরে বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। একে সমর্থন করেছে কংগ্রেস, এনসিপি এবং সিপিআই(এম)-সহ বামপন্থী দলগুলি। ওইদিন সকাল ১১টায় মাইসোর ব্যাংক সার্কেলে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল তাদের। এ ছাড়া শুক্রবার সন্ধ্যা পাঁচটায় বেঙ্গালুরুর টাউন হলে সমস্ত কলেজের পড়ুয়ারা একটি জমায়েতের ডাক দিয়েছে। তার আগেই ১৪৪ ধারা জারি হল। এনিয়ে কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাসবরাজ বোমানি বলেছেন, ‘আমরা কোনও ধরনের হিংসা চাই না। যে কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১৪৪ ধারা জারি করা হল।’

উত্তরপ্রদেশের ছবিটাও অনেকটা একই রকম। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ বিক্ষোভ ঘিরে ইতিমধ্যে আলিগড়-সহ উত্তরপ্রদেশের একাধিক স্থানে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাজ্যে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমাজবাদী পার্টি-সহ বেশ কয়েকটি সংগঠন। বিরোধী কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করার জন্য এই পদক্ষেপ বলে অভিযোগ বিরোধীদের। শোনা যাচ্ছে পিছিয়ে নেই দেশের বাণিজ্য নগরী মুম্বইও। সেখানেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বড়সড় সমাবেশ হতে চলেছে। তবে জনতার কণ্ঠে রুদ্ধের পক্ষপাতী নয় শিবসেনা সরকার। তাই শহরের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।