আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখার জন্য অনেক কিছু সরবরাহ করে বন। ঘন বনের গাছগুলি জলকে বিশুদ্ধ রাখে, বায়ু দূষণ মুক্ত করে, জলবায়ু অপরিবর্তিত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কার্বন ডাই অক্সাইড সঞ্চয় করে এবং খাদ্য ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সরবরাহ করে। পাশাপাশি বন মানুষকে প্রচুর পরিমাণে কর্মসংস্থান এবং ব্যবসার যোগান দেয়। এককথায় আমরা বনকে কিছু না দিলেও, বন আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে, বর্তমানেও দিচ্ছে এবং যতদিন অস্তিত্ব থাকবে ততদিন দিয়ে যাবে। এই সমস্ত জিনিস মাথায় রেখে বন রক্ষা ও সংরক্ষণ করা আমাদের পরম কর্তব্য হওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক বন দিবস উপলক্ষে চলুন জেনে নেওয়া যাক এই দিনের ইতিহাস ও গুরুত্ব।

১৯৭১ সালে ইউরোপীয় কৃষি কনফেডারেশনের ২৩ তম অধিবেশনে বিশ্ব বন দিবস পালন করার বিষয় ওঠে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা সিদ্ধান্ত নেয় প্রতি বছর আন্তর্জাতিক বন দিবস পালিত হবে ২১ মার্চ। এরপর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বিশ্ব বন দিবস এবং আন্তর্জাতিক বন দিবসকে একত্রিত করে ২১ মার্চকে আন্তর্জাতিক বন দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। ইন্ডিয়া স্টেট অফ ফরেস্ট রিপোর্ট ২০২১ অনুসারে, ২০১৯ সালে ভারতের মোট বন ও গাছ যুক্ত এলাকা ছিল ৮০.৯ মিলিয়ন হেক্টর, যা দেশের ভৌগোলিক এলাকার ২৪.৬২ শতাংশ। একটি প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৩৩ শতাংশেরও বেশি এলাকা বন যুক্ত। দেশের বৃহত্তম বনে ঘেরা রাজ্য হল মধ্যপ্রদেশ, এরপর রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ, ছত্তিশগড়, উড়িষ্যা এবং মহারাষ্ট্র।

জাতিসংঘের বনবিষয়ক ফোরাম, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা সরকার এবং বন সংক্রান্ত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বরা যৌথভাবে পালন করে আন্তর্জাতিক বন দিবস। পৃথিবীর প্রায় ৮০ শতাংশ গাছের প্রজাতি পাওয়া যায় বনে। এছাড়া প্রায় ১.৬ বিলিয়ন মানুষ বনের উপর নির্ভরশীল। তাদের জীবিকা, বস্ত্র এবং ওষুধ সহ মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিস গাছের থেকেই পাওয়া যায়। এছাড়াও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল ঘন গাছে ঘেরা বন অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।